পশু কুরবানী বিষয়ে বক্তব্যের জেরে পবা ও বাপাকে লিগ্যাল নোটিশ

পবিত্র কুরবানীর ঈদে পশু কুরবানী নিয়ে মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের জন্য পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মুহম্মদ হাসান শহীদ কামরুজ্জামান (দুর্বার)-এর মাধ্যমে এই লগ্যিাল নোটশিটি বৃহস্পতিবার রেজিস্টার্ড ডাকযোগে, এডিসহ পাঠানো হয়ছে।

গত ২৪ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’ ও ‘নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম’সহ কতিপয় সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে দাবি জানানো হয়, পবিত্র মক্কা শরীফ উনার আদলে ঢাকায় নির্দিষ্ট জায়গায় পশু কুরবানির ব্যবস্থা করতে এবং পার্ক ও খেলার মাঠে পশুর হাট না বসাতে। জনগণের বিচরণ তুলনামূলকভাবে কম এ-রকম ফাঁকা জায়গায় পশুর হাটের ব্যবস্থা করতে। উক্ত মানববন্ধনে দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, তাদের বক্তেব্যে আপামর মানুষের দ্বীনি চিন্তা ও শাশ্বত চেতনায় আঘাত করেছে এবং তা সার্বজনীন মানবাধিকার নীতিমালা ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মতামত প্রকাশের সুনির্দিষ্ট সীমারেখার লঙ্ঘন হয়েছে। তাছাড়া মুসলমানদের বৃহত্তর পবিত্র দ্বীনি উৎসবের মধ্যে ঈদুল আজহা প্রতিপালন অন্যতম একটি আবশ্য কর্তব্য অর্থাৎ ওয়াজিব দ্বীনি ইবাদত। উক্ত পবিত্র ইবাদতটি পশু কুরবানি কেন্দ্রীক হওয়ায় তা সম্পন্ন করতে বৎসরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ৪/৫দিন সময় ব্যয় হয়। এ সময় অধিকাংশ মানুষের নাড়ীরটানে গ্রাম গৃহে ফিরে যাওয়ার প্রবল আকুতি থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোর বাসিন্দাদের বৃহত্তর অংশ গ্রামমুখী হয়ে থাকে এবং পারিবারিক ও সামাজিক সৌহার্দ ও সম্প্রীতির এক মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করে যার যার সামর্থ অনুযায়ী কুরবানির পশু যবেহ করা, তার গোস্ত বিতরনসহ অন্যান্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজগুলো নিজ নিজ দায়িত্বে করে থাকেন।

নোটিশে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের সাথে পবিত্র মক্কা নগরীর তুলনা আনাও সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কেননা পবিত্র মক্কা নগরীতে পশু কুরবানীর ব্যাপারটি মুসলিমদের আরেকটি ইবাদত পবিত্র হজ্জ্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। পবিত্র মক্কা নগরীর মীনাতে ৫০ লক্ষাধিক হাজীর পশু কুরবানীর ব্যাপারটি পবিত্র হজ্জ্বের একটি অংশ এবং সৌদি সরকারের হজ্জ্ব ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সেটি দেখাশোনা করে। পবিত্র হজ্জ্বের বাইরে সৌদি নাগরিকদের নিজস্ব পশু কুরবানির ব্যাপারটির সাথেও ঢাকা বা বাংলাদেশের পশু কুরবানির তুলনা চলে না। কেননা সৌদি আরবে প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ১৫/১৬ জন মানুষের বসবাস আর বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে অন্তত ১২০০ মানুষের বসবাস। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে অন্তত ৪৭ হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের মতো কুরবানির জন্য স্বল্পসংখ্যক নির্ধারিত স্থানে পশু কুরবানি করা বাংলাদেশে বা ঢাকায় অসম্ভব এবং বাস্তবতা পরিপন্থী।

পবা ও বাপাকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে পশু কুরবানির স্থান ও পশুর হাট নিয়ে দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত হেনে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন লিগ্যাল নোটিশে।