লাদাখে মোদি, সতর্ক করল চীন

ভারতে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনারা, বানাচ্ছে স্থায়ী স্থাপনা

নিউজ ডেস্ক : সীমান্তে উত্তেজনা চলাকালে দু’পক্ষেরই এমন কোনও ‘অ্যাকশন’ যাওয়া উচিত নয় যাতে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাদাখ সফরের দিনে ভারতকে এই সকর্ত বার্তা দিয়েছে বেইজিং।

চীনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান শুক্রবার (৩ জুলাই) বলেছে, ‘ভারত ও চীনের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। উত্তেজনা কমানোর উদ্দেশে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি ফের নতুন গতি পেতে পারে এমন কোনও ‘অ্যাকশন’ থেকে উভয়পক্ষেরই বিরত থাকা উচিত।’

সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদির লাদাখ যাত্রা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি চীনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। কিন্তু কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ১৫ জুন গালওয়ানে দু’পক্ষের সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আবহে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মোদির লাদাখ সফরে তা ‘নতুন মাত্রা’ পেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিতে চেয়েছে তিনি।

মঙ্গলবার ঝাও ৫৯টি চীনা অ্যাপে মোদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছিলেন। পাশাপাশি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।

কিন্তু এলএসি’তে মোতায়েন ভারতীয় জওয়ানদের মনোবল বৃদ্ধির উদ্দেশে সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নভরণে এবং ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াতকে সঙ্গী করে প্রধানমন্ত্রীর লাদাখ সফরের দিনেই তাঁর এই মন্তব্য ‘ইঙ্গিতবাহী’ বলেই মনে করা হচ্ছে।

এর আগে, দুইদেশের উত্তেজনার মধ্যেই লাদাখ সীমান্তে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে দীর্ঘ সময় কথা বলে সেনা কর্মকর্তাদের নানা নির্দেশনা দিয়েছে তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বাহিনীর প্রধান সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং স্থলবাহিনীর প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণেকে নিয়ে শুক্রবার স্থানীয় সময় ১০টার দিকে লেহ সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করেন মোদি। এলএসিতে ভারতীয় বাহিনীর যে সব সীমান্ত চৌকি রয়েছে, সেগুলোর কয়েকটিতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছে এবং সীমান্তে মোতায়েন সেনাদের সঙ্গে কথা বলেছে।

১৫ জুন রাতে গালওয়ানের সংঘর্ষে যে সেনারা আহত হয়েছিলেন, তাদের সঙ্গেও মোদি ইতিমধ্যেই লেহতে দেখা করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। তবে মোদি আগে লেহতে গিয়েছে, নাকি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত ফরওয়ার্ড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড নিমুতে তার বিমান আগে অবতরণ করেছে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতর বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, কারও পক্ষ থেকেই আগে জানানো হয়নি যে, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে আজ লাদাখ যেতে পারেন।

এলএসিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরে স্থল সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে এবং বায়ুসেনা প্রধান আর কে এস ভদৌরিয়া আগেই লাদাখ ঘুরে এসেছিলেন। সামরিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে এসেছিলেন তারা। যেকোনও আগ্রাসনের জবাব দিতে ভারত তৈরি বলেও বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।