লবণাক্ত জমিতেও সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন

লবণাক্ত জমিতেও সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন

খুলনা সংবাদদাতা: খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় লবণাক্ত পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষে সফলতা এসেছে। স্বল্প খরচে বাম্পার ফলনে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

তারা বলছেন, আমন মৌসুমে ধান লাগানোর পর জমিগুলো পড়ে থাকতো। সেসব জমিতে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। ফসলও ভালো হয়েছে। এ চাষে ভালো ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মধ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এতে অনাবাদী জমির পরিমাণ কমার পাশাপাশি পূরণ হবে স্থানীয় সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।

কয়রার আমাদি ইউনিয়নের চ-ীপুর গ্রাম ও দুই নম্বর কয়রার সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে সঙ্গে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। কয়রার আমাদি ইউনিয়নের চ-ীপুর গ্রাম ও দুই নম্বর কয়রার লবণাক্ত পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফল হয়েছে কৃষি বিভাগ।

আমাদি ইউনিয়নের চ-ীপুর গ্রামের এক চাষী বলেন, আমি ১৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। ২৫-৩০ বছর ধরে লবণাক্ত এ জমি পড়ে থাকতো। আমন ধান ছাড়া আর কোনো ফসল এখানে হতো না। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে সূর্যমুখী ফুল চাষের পরামর্শ দেয়। তারাই জমির চাষাবাদের খরচ, সার, বীজ ও কিটনাশক দিয়েছে। এছাড়া সবসময় যেকোনো সহযোগিতা করেছে। যে কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে ফলন ভালো দেখে এখন আশপাশের অনেক কৃষকই সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। অথচ এসব চাষিরাই প্রথম পর্যায়ে আমাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান বলেন, কয়রার আমাদি ইউনিয়নের চ-ীপুর গ্রাম ও দুই নম্বর কয়রায় এবার এক হেক্টর লবণাক্ত জমিতে লবণ-সহিঞ্চু সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। নিয়মিত এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন ও তিন নম্বর কয়রায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছিল।

জানা যায়, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বারি, খুলনার তত্ত্বাবধানে এম এল টি সাইট কয়রার উদ্যোগে আমাদি ইউনিয়নের চ-ীপুর গ্রামে বারি সূর্যমুখী-২ ও ৩ এক হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলায় বিএআরআইয়ের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প আওতায় এ গবেষণা কাজটি পরিচালনা করছেন খুলনার সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. হারুনর রশিদ।