লন্ডনে করোনার ‘সুনামি’, হাসপাতালে কোন ঠাঁই নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভয়াবহ সুনামির মতো করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে লন্ডনের হাসপাতালগুলিতে। সময়ের সাথে সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। দেশটিতে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ৪৬৫ জনের। যুক্তরাজ্যের ন্যশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) প্রধান নির্বাহী- ক্রিস হপসন বলেছে, লন্ডনের হাসপাতালগুলি করোনাভাইরাস রোগীদের একটি ‘অবিচ্ছিন্ন সুনামির’ মুখোমুখি হচ্ছে, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হপসন বলেছিল যে, হাসপাতালগুলিতে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে করোনা রোগীর সংখ্যা পাঁচ থেকে সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালগুলি তাদের শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করেছিল কিন্তু সুনামির গতিতে সেই শয্যাও পুরণ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে বেসামাল হয়ে পড়েছে লন্ডনের স্বাস্থ্যসেবা।

সে বলেছিলো যে, সন্দেহভাজন করোনভাইরাস বা অসুস্থ রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ডাক্তার-নার্স ও মেডিক্যাল কর্মীরা। অসুস্থতার কারণে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মেডিক্যাল স্টাফ কাজে যোগদান করতে পারছে না।

বিবিসি রেডিও ৪ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তারা অতিরিক্ত রোগী ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে তাতে আগামী দিনগুলিতে কতটুকু সেবা দিতে পারবেন সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। রোগীদের সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটাকে একটা ধারাবাহিক সুনামির সঙ্গেই কেবল তুলনা করা যায়।’

হাসপাতালগুলির সিইওরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তাদের অতিরিক্ত যে সক্ষমতা ছিল সেটা খুব দ্রুত ব্যবহৃত হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামী দিনগুলিতে কিভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবেন সেটা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না।

সে বলেছিলো যে, এরই মধ্য কিছু কিছু হাসপাতালে মেডিক্যাল কর্মীদের ৫০ শতাংশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এটা অনেক উদ্বেগজনক অনুপস্থিতির হার। অতীতে কখনো এমনটা দেখা যায়নি।

হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার-নার্সদের সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে জানিয়ে ব্রিটেনের ছায়া স্বাস্থ্য সচিব জোনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেছে, হাসপাতালগুলিতে কাজের পরিবেশ সন্তোষজনক নয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার,নার্স ও মেডিক্যাল স্টাফদের সুরক্ষা সরঞ্জাম নেই। সার্জিক্যাল চশমা, মাস্ক ও সুরক্ষামূলক পোষাক মেডিকেল স্টোরগুলিতে নেই। এই পরিস্থিতিতে কাজ করা মেডিক্যাল স্টাফদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।