রোহিঙ্গা নিপীড়নের নতুন তথ্যচিত্র প্রকাশ

রোহিঙ্গা নিপীড়নের নতুন তথ্যচিত্র প্রকাশ

নিউজ  ডেস্ক: মিয়ানমার সেনাবাহিনী কীভাবে দেশটির রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বর নির্যাতন চালিয়ে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল সে সংক্রান্ত একটি তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। গণহত্যার মতো নিকৃষ্টতম অপরাধের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি মামলার পরপরই এই তথ্যচিত্র জনসম্মুখে এলো।

গণহত্যার উদ্দেশ্যেই ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিধন অভিযান চালায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ ছাড়াও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার নানা অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। কিন্তু এখনো তা অস্বীকার করেই চলেছে দেশটি।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা সম্প্রতি রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, শত শত রোহিঙ্গাকে সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে দেশটির সেনাসদস্যরা। মিয়ানমারের সেনারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে এই নির্যাতন চালাচ্ছে। সেনাসদস্যরা দলগতভাবে একজন একজন করে রোহিঙ্গা মুসলিমকে নানা কৌশলে নির্যাতন করছে। কেউ বুট জুতা দিয়ে লাথ মেরে ফেলে দিচ্ছে তো কেই বন্দুক দিয়ে তাদের শরীরের যত্রতত্র পেটাচ্ছে। একজন মুখে লাথি মেরে ক্লান্ত হলে অপরজন এসে পুনরায় তা শুরু করছে। বাকি রোহিঙ্গারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকিয়ে আছেন সেদিকে।

সাঈদ নামে এক রোহিঙ্গা তরুণ জানায়, একজন সৈন্য আমার মাথা থেকে শুরু করে পুরো শরীরে লাথি মারা শুরু করে। তারপর সে বলা শুরু করে, তোমাদের সব মুসলিমকে মেরে ফেলা হবে। আমরা অপরাজেয়’’- এমন কথা শুনে সবার মনের মধ্যে মৃত্যুর ভয় ঢুকে পড়ে। তথ্যচিত্রে দেখা যাচ্ছে, পানিতে পড়ে থাকা সন্তানদের লাশ তুলে আনছে তাদের পরিবারের মানুষজন। পরিবারগুলো জানাচ্ছে, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। যেসব বাড়িতে মানুষ ছিল না তাদের সন্তারা একা বাড়িতে ছিল। আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

রাখাইনে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার বর্বর হানাদার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়, গণহত্যা ও ধর্ষণ চালায়। তারপর রাখাইন থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তারা এখনও নিজেদের জন্মস্থানে ফিরতে পারেনি।