রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় যেসব পানীয়

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় যেসব পানীয়

নিউজ ডেস্ক: শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশেষভাবে এই ‘ইমিউনিটি সিস্টেম’ বাড়ানোর দিকে বেশি খেয়াল দিচ্ছেন সবাই। এটি শরীরে প্রতিনিয়ত কাজ করতে থাকে, যার ফলে ক্ষতিকর ভাইরাস আক্রমণ করতে গিয়ে নিজেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শরীরে বিশেষ এই শক্তি বজায় রাখার জন্য খনিজ ও ভিটামিনের দরকার পড়ে। নানাভাবেই সেটা খাওয়া যায়। তবে বেশ কিছু পানীয় আছে, যা সর্দি বা বিভিন্ন রকম ফ্লু থেকে সহজে দেবে সুরক্ষা। এখানে থাকছে এমন কিছু পানীয়র খোঁজ

এ ধরনের ফলের রস থেকে সহজে মিলবে ভিটামিন সি, যা শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে। শরীরে ভিটামিন সি–এর ঘাটতি থাকলে শরীরের নানা সমস্যা সারাতে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। তাই কমলা, জাম্বুরা বা অন্য যেকোনো লেবুজাতীয় ফলের রস খেতে পারেন সহজে। এর ফলে নিজের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হবে আরও শক্তিশালী। কারও ঠান্ডার সমস্যা থাকলে ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ এই পানীয় তার জন্য কার্যকর দাওয়াই হতে পারে। তবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি খাওয়ার দরকার নেই।

ভিটামিন সি ছাড়াও প্রতি গ্লাস লেবুজাতীয় পানীয়তে সাধারণত যেসব উপাদান থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কমলায় মিলবে পটাসিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন বি-৯, জিঙ্ক এবং কমলা ও জাম্বুরায় আছে ভিটামিন এ।

কমলার সঙ্গে আপেল ও গাজর মিশিয়ে তৈরি হতে পারে চমৎকার এক গ্লাস পানীয়, যা আপনার শরীরকে সুস্থ রেখে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবে। কমলা ও আপেল আপনার প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি সরবরাহ করবে। ভিটামিন এ আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতার জন্য জরুরি একটি উপাদান, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিটা ক্যারোটিন আকারে গাজর থেকে সহজে মিলবে। গাজরে থাকা বি-৬ উপাদান ইমিউন সেল বাড়ানোর পাশাপাশি অ্যান্টিবডি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এই পানীয় তৈরি করতে ২টি বড় গাজর, ২-৩টি মাঝারি সবুজাভ আপেল ও ২টি কমলা লাগবে। এরপর প্রতিটি উপকরণ আলাদা করে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে মিশিয়ে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করতে পারেন। কেউ চাইলে স্বাদ বাড়াতে এর সঙ্গে আদা বা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এই পানীয় থেকে যেসব উপকারী উপাদান মিলবে, তার মধ্যে আছে—গাজর থেকে পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬; কমলা থেকে ভিটামিন বি-৯ আর আপেল ও কমলা দুটো থেকেই মিলবে ভিটামিন সি।

এই চার উপকরণে তৈরি এই পানীয় খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন আজ থেকেই। দারুণভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ফিরিয়ে আনবে এই ফলমূলের রস। এখানে ব্যবহার করা চারটি উপকণের মধ্যে তিনটিই মূল বা শেকড়জাতীয় সবজি (বিটরুট, গাজর ও আদা), তার সঙ্গে সুস্বাদু ফল আপেল মিলে তৈরি করে নতুন ধরনের স্বাদ। সবজিজাতীয় উপকরণগুলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রদাহজনিত সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করে। শরীর ব্যথা, ঠান্ডা, কাশি বা নাক দিয়ে পানি পড়ার সমস্যাগুলো কমে আসে এই পানীয়র গুণে। যেসব রোগী বাতজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা এই পানীয় থেকে সরাসরি উপকার পেতে পারেন। কারণ, ব্যথা কমানোর জন্য আদা বেশ কার্যকর। এই পানীয় থেকে যেসব পুষ্টি উপাদান মিলবে, তার মধ্যে আছে—পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬, বি-৯ ও ভিটামিন সি।

সবচেয়ে সহজে ও কম উপকরণে তৈরি করা যায় টমেটোর পানীয়। এটি আপনার সময় বাঁচাতেও সাহায্য করবে। জুসার বা ব্লেন্ডার না থাকলেও এই পানীয় আপনি ঘরে তৈরি করতে পারবেন। টমেটোতে থাকে প্রচুর ভিটামিন বি-৯। এই পানীয় আপনার শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। টমেটো থেকে কিছুটা ম্যাগনেসিয়ামও মিলবে। কয়েকটা বড় আকারের গাছপাকা টমেটোর সঙ্গে কিছুটা সেলারিপাতা, পেঁয়াজকুচি আর এক চিমটি গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন টমেটোর এই দারুণ পানীয়।

তথ্যসূত্র: মিনিমালিস্ট বেকার, হেলথ লাইন, আরবান আমব্রেলা