রিজার্ভের অর্থ চুরি- হ্যাকিং নাকি ডাকাতি? প্রশ্ন ড. এমাজউদ্দিনের

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা:বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি, হ্যাকিং না ডাকাতি হয়েছে তা সঠিকভাবে জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ধানের শীষ সমর্থক ফোরামের আয়োজনে ‘বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আটশ’ কোটি টাকা চুরি হয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এ অর্থের পরিমাণ আরো অনেক বেশি বলা হয়েছে। ফলে জনগণকে প্রকৃত ঘটনা থেকে আড়ালে রাখতে চাইছেন ক্ষমতাসীনরা।
সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের কথা উল্লেখ করে ড. এমাজউদ্দিন বলেন, সরকারি প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা একই। এসব বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্ষমতা নেওয়ার সময়ের কি অবস্থা ছিলো, বর্তমানে কি অবস্থায় আছেন? এ সব বিষয় নিয়ে ভাবুন। তারপর জনগণকে জানান।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ড. আতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কোথায় সরে যাবেন? এভাবে সরে যেতে পারেন না। আটশ’ কোটি টাকা লোপাট হওয়ার ঘটনা জনগণের কাছে ব্যাখ্যা দিন।

নোমান বলেন, আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা অবস্থায় রাজনীতি করেছেন। তিনি এক সময় রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। ফলে জনগণের সঙ্গে রাজনীতি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাট করা হয়েছে।
পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন, প্রশ্ন এমাজউদ্দীনের:
রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন- এমন প্রশ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদের। এই পদত্যাগপত্র সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ধানের শীষ সমর্থক ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন এমন প্রশ্ন রেখে এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে যে ব্যক্তি নিয়োগ দিয়েছেন (অর্থ মন্ত্রণালয়), সেই কর্তার কাছেই পদত্যাগপত্র জামা দেয়ার নিয়ম। কিন্তু গভর্নর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এর ফলে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সময় গভর্নরের চোখে অশ্রু ছিল, এ কথা আমি শুনেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির দায় নিয়ে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন সাত বছরের বেশি সময় ধরে গভর্নরের দায়িত্ব থাকা আতিউর।

বিএনপি আতিউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করে আসলেও দলটির অন্যতম থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত বরেণ্য এ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, তার স্বপদে বহাল থাকা উচিত ছিল। ‘গভর্নরের পদত্যাগ করা উচিত হয়নি। বরং তার উচিত ছিল প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা এবং টাকা উদ্ধার করা,’ বলেন এমাজউদ্দীন।
অর্থ লোপাটের ঘটনায় তদন্ত কমিটি না করে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনেরও দাবি জানান তিনি।