রাস্তার বেহাল দশায় এলাকায় যেতে লজ্জা লাগে -অর্থমন্ত্রী

রাস্তার বেহাল দশায় এলাকায় যেতে লজ্জা লাগে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে নিজের এলাকায় যেতে লজ্জা লাগে। শুধু রাস্তা তৈরির বহু প্রকল্প নেয়া হয়, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেয়া হয় না। এটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, তার পরও শুধু তারাই কাজ পায়। এদের কারণে বিদেশি ভালো প্রতিষ্ঠানও কাজ পায় না। এখন থেকে মহাসড়কে টোল আদায় করা হবে এবং সেই টোলের টাকা দিয়ে যতটা সম্ভব মহাসড়ক মেইনটেন্যান্স করতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ইংল্যান্ড, শ্রীলংকায় কোথায় পাহাড়-পর্বত রয়েছে। আমরা তো মহাসাগর বিস্তৃত দেশেও দেখি। তারাও তো রাস্তা করে, সেখানে রাস্তার লাইফটাইম ৫০ বছর। তাহলে আমরা কেন পারব না।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাস্তার বিষয়ে নদীমাতৃক দেশের কথা আর কোনো দিন কোনো মিটিংয়ে বলবেন না, এটা ঠিক নয়। এগুলো কাকে বোঝাচ্ছেন? নিজেরা কাজ করতে পারবেন না, করেন না, হয় বোঝেন না, না হয় করেন না; দুটোর একটা। করতে চাইলেই করা যায়। আমার এলাকায় যদি যান রাস্তা দেখে কান্না আসবে। মানুষ আমাকে প্রতিদিন গালি দেয়। আমি গ্লাস নামাতে পারি না। গ্লাস বন্ধ করে যাওয়ার চেষ্টা করি। তাও যেতে পারি না। এই হলো আমাদের অবস্থা।

মুস্তফা কামাল বলেন, কারণটা কী? আমরা কী অন্যায় করেছি? ইংল্যান্ডের একটি এক নম্বর কোম্পানি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তা আমরা জানি। ওই কোম্পানি রাস্তাঘাট তৈরি করতে তিনটা গাড়ি ব্যবহার করে। তিনটি গাড়ি মিলে চোখের নিমিষেই ১ কিলোমিটার রাস্তা করে ফেলে।

তিনি বলেন, এসব রাস্তার লাইফটাইম হচ্ছে ৫০ বছর। তৈরির প্রথম দশ বছর কিছুই করা লাগবে না। দশ বছর পর ৫ শতাংশ এগ্রি গ্যাস মেশাবে, এর ফলে আরও দশ বছর চলবে। এভাবে প্রতি ১০ বছর পর পর এগ্রি গ্যাস মেশালেই এর লাইফটাইম ৫০ বছর হবে।

কামাল বলেন, আমাদের দেশে এগ্রি গ্যাস জীবন ব্যবহার করতে দেখিনি। এগ্রি গ্যাস কী জিনিস সেটিও আমাদের দেশীয় কোম্পানিগুলো জানে কিনা সন্দেহ। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, কার্যক্রমে গুণগত মান আনতে হলে অবশ্যই আপনাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।

টোলের টাকা দিয়ে মহাসড়ক মেইনটেন্যান্স:

অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে মহাসড়কে টোল আদায় করা হবে এবং সেই টোলের টাকা দিয়ে যতটা সম্ভব মহাসড়ক মেইনটেন্যান্স করতে হবে। আর রাস্তার প্রকল্প অনেক পাস করা হয়েছে তাই যেগুলোর কাজ চলছে সেগুলো শেষ করেন তার পরে নতুন রাস্তা দেওয়া হবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মহাসড়কে টোল আদায়ে অটোমেটেড মেশিন ব্যবহার করতে হবে যাতে করে সড়কে গাড়ি দাঁড় করাতে না হয়। বিদেশে এমন সিস্টেম রয়েছে। আমার কথা হচ্ছে বিদেশিরা পারলে আমরা কেন পারবো না।