রাজস্বের চেয়ে ব্যয় বাড়ায় বিপাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাংকগুলো

নিউজ ডেস্ক:রাজস্বের চেয়ে ব্যয় বৃদ্ধি দ্রুত হারে বাড়তে থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়েছে। এ সমস্যা কাটাতে ব্যাংকগুলোকে ঋণহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর ব্লুমবার্গ।

দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতি ২০১৩ সালের পর থেকে ২ শতাংশের বেশি বাড়েনি এবং বেকারত্বের হার ২৭ শতাংশ। এর ওপর বাড়তে থাকা কর, তেলের দাম ও উচ্চ ইউটিলিটি বিলের কারণে ভোক্তাদের অবস্থা নাজেহাল। এদিকে বিভিন্ন কোম্পানি জমি বরাদ্দকরণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারছে না এবং সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ঋণের মধ্যে এতটাই ডুবে গেছে যে তারা রাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এজন্য অনেক ঋণদাতা আফ্রিকার বাকি অংশে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে।

কেপটাউনের সানলাম ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের ইকুইটি রিসার্চ বিভাগের প্রধান প্যাট্রিক রসু বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ কতটা কঠিন, এটি তা-ই প্রতিফলিত করছে। বড় ব্যাংকগুলোর আফ্রিকার শাখা ভালো করছে না। প্রবৃদ্ধির হার নিম্ন ও ব্যয় বাড়ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বড় চার ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক গ্রুপ, ফার্স্টর্যান্ড লিমিটেড, আবসা গ্রুপ লিমিটেড ও নেডব্যাংক গ্রুপ লিমিটেড। সবক’টিরই প্রতিবেদন হয় হতাশাজনক, না হয় বিনিয়োগকারীদের জন্য পূর্ব সতর্কতামূলক যে লক্ষ্য পূরণ ক্রমেই কঠিনতর হয়ে উঠছে। এরা সবাই ভুগছে, ব্যাংকিং ভাষায় যাকে বলে ‘নেতিবাচক গ্রাস’—যখন আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়।

ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ আভাসও কুয়াশাচ্ছন্ন। ফার্স্টর্যান্ড বলছে, ২০১৮ সালের প্রাইভেট-ইকুইটি গেইনের কারণে পুরো বছরের আয় প্রবৃদ্ধি হয়তো মূল্যস্ফীতি হারকে হারাতে পারবে না। নেডব্যাংক বলছে, ব্যয়-আয় অনুপাত কমানো তাদের জন্য ক্রমেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।

নেডব্যাংকের রাজস্বের অর্ধেক আসে করপোরেট ও ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং থেকে। যদি কোম্পানিগুলো আবার আস্থার জায়গায় আসতে পারে, তবে তারা লাভবান হবে। অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও আবসা আফ্রিকায় নিজেদের বিস্তৃতির মাধ্যমে রাজস্ব বাড়াতে পারবে বলে মনে করেন মার্জেন্স ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজারসের ইকুইটি বিশ্লেষক নলওয়েনদেল মোথমবেনি। তিনি আরো বলেন, ব্যাংক হিসেবে আপনাকে ঋণের হার বাড়াতে হবে, এটিই একমাত্র পথ। অন্তত ব্যাংকগুলোকে এমন অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে, যাতে ব্যবসায়িক আস্থা ফিরে আসে, করপোরেট গ্রাহকদের সঙ্গে আরো বেশি করে যুক্ত হতে হবে এবং এরা যখন ফের বিনিয়োগ করতে শুরু করবে, তখন ঋণ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।