যুদ্ধাপরাধ:আরও ৩ জনের প্রতিবেদন প্রস্তুত

যুদ্ধাপরাধ:আরও ৩ জনের প্রতিবেদন প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

রোববার ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন চূড়ান্তের কথা জানায় সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক। এটি তদন্ত সংস্থার ৭৫তম প্রতিবেদন।

ওই তিন ব্যক্তি হলো- আব্দুর রশিদ মিয়া ও সাহেব আলী মালিথা। অন্যজন পলাতক থাকায় তদন্ত সংস্থা তার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেনি। আসামিদের মধ্যে দুজন গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে।

মামলায় আইওসহ ১৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দিসহ তিনটি ভলিউমে মোট ৭৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটির প্রস্তুত করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২১ আক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির পরদিনই আব্দুর রশিদ মিয়া ও সাহেব আলী মালিথাকে গ্রেফতার করে ঝিনাইদহ পুলিশ। এরপর থেকে তারা দুজন কারাগারে।

সংস্থাটির প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করে বলেন, আসামি আব্দুর রশিদ মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধী জামাতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো।

মামলা-তদন্তের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্যপ্রমাণ তদন্তে উঠে এসেছে।

প্রথম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৭ জুন আব্দুর রশিদ মিয়ার নেতৃত্বে সহযোগী সাহেব আলী মালিথা ও পলাতক আসামিসহ ১০ থেকে ১৫ জন রাজাকার কোলা গ্রামে শহীদ আজিবর মন্ডলদের বাড়ি আক্রমণ করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মহির উদ্দিন মন্ডল ও আসির উদ্দিন মন্ডলকে না পেয়ে তাদের তিন ভাই আজিবর, হবিবর রহমান মন্ডল ওরফে হাবা মন্ডল ও আনছার মন্ডলকে আটক ও মারধর করে। পরে তাদের পিঠমোড়া করে বেঁধে ঝিনাইদহ শহরের দিকে নিয়ে যাওয়ার পর মাগুরা রোডের ধোপাঘাটা ব্রিজের ওপর গুলি করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ নবগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয় আসামিরা।

দ্বিতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২৪ জুন আসামিরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী কোলা গ্রামের নিরীহ ও নিরস্ত্র মুলুক চাঁনকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর তার আর সন্ধান মেলেনি।