মৃতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলতে বলায় একাত্তর টিভির উপস্থাপককে লিগ্যাল নোটিশ

‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনায় মৃতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলতে বলার মাধ্যমে দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে একাত্তর টিভির টক শো ‘একাত্তর জার্নাল’-এর উপস্থাপিকা ফারজানা রূপাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক মুহাম্মদ মাহবুব আলমের পক্ষে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাসুদুজ্জামান রেজিস্টার্ড ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ১৯ মার্চ একাত্তর টিভির টক শো ‘একাত্তর জার্নাল’-এর একটি পর্বে ফারজানা রূপা করোনা ভাইরাসে মৃতদের লাশ দাফন না করে পুড়িয়ে ফেলাকে ‘মানবততা’ ও ‘বিজ্ঞানসম্মত’ বলে বক্তব্য প্রদান করেছে।

নোটিশে বলা হয়, দাফনের মাধ্যমে মৃতদের লাশ কবরস্থ করা একটি পবিত্র ইসলামী বিধান। পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে নোটিশে বলা হয়, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা মৃতদের কবরস্থ করার বিধান দিয়ে আদম-সন্তানকে সম্মানিত করেছেন। মৃতদেহের সর্বোচ্চ সম্মান রক্ষা করা ইসলামের সুপ্রতিষ্ঠিত আদব। অথচ ফারজানা রূপা করোনার অজুহাতে মুসলিমদের লাশ পুড়িয়ে ফেলতে চায়।

নোটিশে মার্কিন সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা মোটেও বিজ্ঞানসম্মত বা পরিবেশসম্মত নয়। মৃতদেহ পোড়ানোর ফলে বাতাসে বিভিন্ন পরিবেশ দূষণকারী গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে- যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

নোটিশদাতা বলেন, সাংবিধানিকভাবে যেহেতু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, সুতরাং ইসলামী আক্বীদাসমূহ রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মুসলিমদের নিজ দ্বীনের বিধান অনুযায়ী দাফনের মাধ্যমে কবরস্থ হওয়ার অধিকার রয়েছে। অথচ ফারজানা রূপা মুসলিমদেরকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করতে চায়। মুসলিমদের লাশ পুড়িয়ে ফেলার পাঁয়তারা করার মাধ্যমে ফারজানা রূপা নোটিশদাতার দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে। মৃতদেহের জন্য অসম্মানজনক বা ক্ষতিকর কোনো কাজ করাটা বাংলাদশে প্রচলিত দ-বিধির ২৯৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ডিজিটাল মাধ্যমে এমন ধর্মীয় অবমাননামূলক তথ্য সম্প্রচার করাটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২৮ ধারার অধীনে অপরাধ।

নোটিশে বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ফারজানা রূপাকে একাত্তর টিভির উল্লেখিত টক শো-তে সুস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা বিষয়ক মন্তব্যগুলো প্রত্যাহার করতে হবে এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতে ধর্ম অবমাননামূলক মন্তব্য আর করবে না- এমন প্রতিশ্রুতি দিতেও ফারজানা রূপাকে আহবান জানানো হয়েছে। অন্যথায় নোটিশদাতা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে নোটিশে বলা হয়েছে।