মুসলিম বিশ্বে নৈরাজ্য, অশান্তি ও রক্তপাতের মূল কারণ সৌদি ওয়াহাবি মতবাদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস-সেনা বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি বলেছেন, পাকিস্তানে তৎপর সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ভারত, আফগানিস্তানসহ প্রতিবেশী সব দেশের জন্য সংকট তৈরি করেছে। তাই পাকিস্তানের উচিত এ বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করা।
মুসলিম বিশ্বে নৈরাজ্য, অশান্তি, রক্তপাত ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতের জন্য উগ্র ওয়াহাবি মতবাদকে দায়ী করে কাসেম সোলাইমানি বলেছেন, পাকিস্তানের সরকার ও জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে সৌদি আরবের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ যাতে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের হাতে না পড়ে এবং পাকিস্তানকে যাতে আন্তর্জাতিক সমাজের মুখোমুখি দাঁড় না করায়।
আমেরিকার ছত্রচ্ছায়ায় সৌদি আরব পশ্চিম এশিয়ায় ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের সহায়তায় ইরানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। পাকিস্তান সীমান্তে তৎপর সন্ত্রাসীদের প্রতি সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তা এবং সন্ত্রাসীদের দমনে পাক সরকার শক্ত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে ইরান সীমান্ত অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা থেকে বোঝা গেছে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের প্রতি সৌদি সমর্থন থেকে ওই দেশটির ইরান বিরোধী তৎপরতার বিষয়টিও প্রমাণিত হয়েছে।
পাকিস্তানে ওয়াহাবি মতবাদ বিস্তারের কিছু ক্ষেত্র বা পরিবেশ রয়েছে। সেদেশে সৌদি আরবের অর্থায়নে পরিচালিত ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা মাদ্রাসাগুলো ওয়াহাবি সন্ত্রাসবাদ বিস্তারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি সারা বিশ্বের কাছে এতটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদকে অর্থ সহায়তা দেয়ার অভিযোগে সৌদি আরবকে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য রো খান্না এ ব্যাপারে বলেছেন, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব আমেরিকার তৈরি অস্ত্র আল কায়দা সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, সারা বিশ্বে বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের যে বিস্তার ঘটেছে তার মূল উৎস সৌদ আরব এবং ধর্মের নামে প্রচারিত বিকৃত ওয়াহাবি মতবাদ।
সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উগ্র ওয়াহাবি মতবাদের শিক্ষা দেয়ার কারণে পাকিস্তান আজ তাকফিরি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ মোটেই সন্তোষজনক নয়। অভিন্ন সীমান্তে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে সবার প্রত্যাশা। এর অন্যথায় সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা করা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনে ইরান নিজেই শক্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
সূএ: পার্সটুডে