ভুলে ভরা ভারতীয় বই দিয়ে দেশীয় স্কুলে পাঠদান

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশীয় নয়, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকাশনীর একাধিক বই দিয়ে ফেনী শহরের জেলা প্রশাসন পরিচালিত ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের প্রথম পাঠ শুরু করছে।

এসব বই আবার ভুলে ভরা বলে দাবি অভিভাবকদের। বই কিনতে তাদের গুণতে হচ্ছে উচ্চমূল্য। এতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকসহ শিক্ষানুরাগীরা।

ফেনীর জেলা প্রশাসক বলছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে সে সব বই প্রত্যাহার করে দেশীয় বই পাঠ্য করা হবে।

ফেনীর একটি বিদ্যালয়ের খুদে শিক্ষার্থীরা যে ছড়াগুলো পড়ছে তা বাংলাদেশের কোনো প্রকাশনার না, ভারতীয় শিশু সাহিত্য সংসদ প্রকাশনা থেকে আসা একটি বই। অভিভাবকরা বলছেন, ভারতীয় ১০০ রুপির এই বই তাদের কিনতে হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

শহরের ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মত, এই বিদ্যালয়ের নার্সারিতে ৩টি, কেজিতে ৩টি এবং এ-লেভেলের জন্য ১টি ভারতীয় বই পাঠ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দেয়া নির্ধারিত ৩টি দোকানে পাওয়া যায় এসব বই। বইগুলো ভুলে ভরা আবার আমাদের সংস্কৃতির সাথেও সাংঘর্ষিক।

ভারতীয় এসব বই শহরের যে দোকানে পাওয়া যায়, তাদের একজন জানালেন এ বই বিক্রির রহস্য।

তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের এডিসি জেনারেল সুজন সরকার হলেন শিশু নিকেতনের সভাপতি। উনি, বিদ্যালয় কমিটি এবং প্রধান শিক্ষক- উনারা সম্মিলিতভাবে আমাদের এই বইগুলো বিক্রি করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

দেশীয় সংস্কৃতি এবং প্রকাশনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নুরুল করিম মজুমদার। তিনি বলেন, সংস্কৃতির ভিন্ন একটি ধারার, ভিন্ন একটি চিন্তার এই বইগুলো পাঠ্য করা কোনোভাবেই সমীচীন হয়নি।

ভারতীয় বইকে পাঠ্য করা সমর্থনযোগ্য নয়, স্বীকার করে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান।

১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থীর এ ফেনী শিশু নিকেতন স্কুলটি ২০১৮ সালে মাধ্যমিক স্থরে উন্নীত করার সময় ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট হাইস্কুল নামকরণ করা হয়।