ভারতীয় অবৈধ বিজ্ঞাপন: চরম ক্ষতির মুখে বাংলাদেশ
নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: “আপনি কি মোটা, চিকন কিংবা লম্বা হতে চান? মহিলাদেরকে বুঝতে হবে কেন আপনার স্বামী আপনার প্রতি আগ্রহ দেখায় না। আপনি কি গোপন অঙ্গের সমস্যায় ভুগছেন?” প্রতিবেশি দেশ ভারতের এমন অবৈধ বিজ্ঞাপনের চটকদার কথায় বাংলাদেশের অনেক দর্শক কাবু হলেও আদতে ফলাফল শূন্য। এভাবে দিনের পর দিন মানুষকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করা হলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই।
ভারতের এসব পণ্যে দেশের বাজার সয়লাব হলেও অন্ধকারে বিএসটিআই। গুণগত মান যাচাইতো দূরে থাক, আমদানীকৃত পণ্য পরীক্ষায় যে তালিকা তাদের দেয়া আছে তার একটিও নেই এখানে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, আমরা মূলত: কয়টা পণ্য আসার কথা ছিলো, কয়টা পণ্য আসছে এসব বিষয়ে নজর রাখি। যেমন ধরেন, আসার কথা ৫৯ টা খাদ্যপণ্য, আমরা দেখবো ৫৯ আসছে কিনা। কিন্তু খাদ্যের গুণগত মান আমরা নির্ধারণ করবো না। আর এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাজ বলেই দায় সারেন তিনি।
এদিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, ঔষধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত পণ্যের বিজ্ঞাপন ও এদেশে বিক্রির জন্য অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক হলেও এ ক্ষেত্রে তা করা হয় নাই।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, এই ঔষধগুলি নিশ্চিত ক্ষতিকর। এই ঔষধগুলো কেমন করে উৎপাদন হয়েছে, কোথায় উৎপাদন হয়েছে বা কিভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই। কারণ এই ঔষধগুলো অবৈধ, এগুলো নিবন্ধিত ঔষধ নয়।
মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর হলেও নিয়ম লঙ্ঘণ করে এসব পণ্য দেশে আসা ঠেকাতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
তবে এর ব্যবস্থা হিসেবে আমরা যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে এই ঔষধগুলো বিক্রি হয় আমরা সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে হানা দিচ্ছি। র্যাব, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট এবং ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তার সমন্বয়ে আমরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করছি এবং বিভিন্ন সময়ে জেল জরিমানাও করা হচ্ছে বলেও জানান রুহুল আমিন।
অবৈধ বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে ২০১১ সালে চিঠি দিয়েছিলো ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এরপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার তথ্য মন্ত্রনালয়ের বক্তব্য চাওয়া হলেও কোনো কর্মকর্তা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
প্রতারণা মূলক এসব টিভি বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধে এখনই যদি উদ্যোগ না নেয়া হয় তাহলে দেশের কোটি কোটি মানুষ প্রতারণার শিকার হওয়ার সঙ্গে বিদেশে চলে যাবে মোটা অঙ্কের টাকাও।