বিদেশি ঋণের সুদে ব্যয় বেড়ে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় হবে ১২ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। যা গত তিন বছরের ব্যয়ের (৬ হাজার ২শ’ কোটি টাকা) চেয়ে দ্বিগুণ। ঋণের সুদ হার বৃদ্ধি ও বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ ব্যবহারের কারণে সুদ পরিশোধ ব্যয়ের এ উল্লম্ফন বলে আভাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন।

মূলত মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক ব্যয় কাঠামো ধরে বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত ব্যয়ের আগাম ধারণা সংক্রান্ত এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

ওই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ২০১৮-২১ এই তিন অর্থবছরে সুদ-আসলে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু প্রকৃত ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে ৩৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি গত তিন বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৮ অর্থবছরে সুদ-আসলে পরিশোধ করা হয়েছিল ২১ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে ঋণ শোধ দেয়া হয় ১৫ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে চলে যাওয়ায় ঋণের বিপরীতের সুদের হার বেড়েছে। তাই সুদ পরিশোধ ব্যয়ও বেড়েছে।

সুদের ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়বে। লাইবরসহ সুদের হার ও নতুন ঋণ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে। কারণ বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এতে অর্থনৈতিক মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনৈতিক কারণে বিশ্বব্যাংক, জাপানসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো ঋণের আর্থিক শর্তাবলি আরও কঠিন করেছে।

প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ নেয়া হয়েছে ৬৩৫ কোটি ডলার, একই সময়ে প্রকৃত ঋণ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয় ১২৪ কোটি ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮৪৮ কোটি ডলার, এর বিপরীতে একই সময়ে প্রকৃত ঋণ পরিশোধ খাতে ব্যয় হবে ১৩৫ কোটি ডলার। আর আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে ঋণপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮৮৫ কোটি ডলার। একই সময়ে ঋণ পরিশোধের লক্ষ্য হচ্ছে ১৪০ কোটি ডলার।