বাড়বে বেকারত্ব ও দারিদ্রের হার

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারী বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের আঘাত লেগেছে। সবকিছু বন্ধ থাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৫ কোটির বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। ফলে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা লাখ লাখ নারী-পুরুষ আবারও গরিব হয়ে যেতে পারেন। কারণ, বেকার হয়ে গেলে কিংবা ক্রয়ক্ষমতা কমে গেলে তারা আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাবেন।

এমন ঝুঁকিতে আছেন দেশের প্রায় অর্ধকোটি লোক। বিপুল এ জনগোষ্ঠী বর্তমানে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে রয়েছে। ফলে লকডাউন পরবর্তী সময়ে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যেতে পারে।

২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। দফায় দফায় বাড়িয়ে এ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। বেকার হয়ে পড়েছেন পরিবহনশ্রমিক, রিকশাচালক, দিনমজুর, হোটেল-রেস্তোরাঁকর্মী, ছোট দোকানদার। আর নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের অনেকেই রয়েছেন চাকরি হারানোর শঙ্কায়।

উদাহরণ হিসেবে বিশেষজ্ঞমহল জানিয়েছেন, সামনে বোরো মৌসুম। শহর থেকে যেসব লোক গ্রামে গেছেন, তাদের অনেকেই কাজের জন্য কৃষি শ্রমবাজারে ঢুকবেন। ফলে কৃষিশ্রমের বাজারে চাহিদার চেয়ে বেশি শ্রমিক পাওয়া যাবে, যা মজুরি কমিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৯ সাল শেষে বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। অতি-দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১০ শতাংশ। দেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ গরিব মানুষ আছে। তাদের মধ্যে পৌনে দুই কোটি মানুষ হতদরিদ্র। অর্থনীতিতে মন্দা আসবে-এটা প্রায় নিশ্চিত। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ আবারও গরিব হয়ে যেতে পারেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম বলেন, গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ৪০-৪২ লাখ মানুষ আবার গরিব হয়ে যেতে পারে। তাই এবার গরিব হওয়ার সংখ্যা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হবে। কারণ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সবকিছুই বন্ধ আছে।