বাম্পার ফলন পেঁয়াজের

নিজস্ব প্রতিবেদক:ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাধুহাটি গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পেঁয়াজ। ক্ষেতেও রয়েছে, যা কৃষক বাড়িতে এনে স্তুপ করে রাখছেন বিক্রির আশায়। পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় অল্প টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হন উপজেলার কৃষকরা। স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলায় পেঁয়াজের প্রচুর চাষ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সাধুহাটি গ্রামে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলায় চাষযোগ্য জমি আছে ২৮ হাজার ৫শ হেক্টর। তারমধ্যে এ বছর পেঁয়াজের চাষ হয়েছে ৬ হাজার ১শ ৫৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে শুধু সাধুহাটি গ্রামে চাষ হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে। বারি-১, লাল তীর, লাল তীর কিংসহ বেশ কয়েকটি জাতের পেঁয়াজ বেশি চাষ হচ্ছে। এবছর অনেক কৃষক সুখসাগর জাতও চাষ করেছেন।

উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের কৃষক সমশের আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে মেয়েরা পেঁয়াজ থেকে গাছ কেটে আলাদা করছেন। বাড়ির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পেঁয়াজ। ঘর-বারান্দা কোথাও একটু খালি জায়গা নেই। শোবার ঘরের খাটের নিচেও পেঁয়াজ।

সমশের আলী জানান, এবছর সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন তিনি। এরমধ্যে ৬ বিঘা করেছেন লাল তীর জাত, বাকিটা সুখসাগর জাত। যার মধ্যে অর্ধেক জমির পেঁয়াজ বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। এখনও মাঠে পেঁয়াজ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একবিঘায় ১শ মণ পেঁয়াজ পাচ্ছেন। যা বিক্রি করে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘরে আসবে।

একই গ্রামের কৃষক শাহিনুর রহমান জানান, তিনি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ক্ষেত থেকে ৩শ মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। যা বিক্রি করে প্রায় দেড় লাখ টাকা পাবেন।

বাখরবা গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে এ উপজেলায় পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। যে কারণে কৃষকরা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন না। তাই অনেক সময় সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

সাধুহাটি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনোজ কুমার বিশ্বাস জানান, এ ব্লকে ৭ হাজার হেক্টর চাষযোগ্য জমি আছে। আর ১৫৬০টি কৃষি পরিবার রয়েছে। এবছর সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। কম-বেশি প্রায় সব পরিবারে রয়েছে পেঁয়াজ। চাষটি ক্রমেই বাড়ছে বলে তিনি জানান।