বাংলাদেশে আইএস আছে দাবিদার আমেরিকাই আইএস’র জন্মদাতা

ডা. মুহম্মদ আলীঃ মার্কিন কংগ্রেসে শুনানীতে ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট এন্টনি ব্লিনকেন বলেছে, “গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার বিষয় ঘটেছে, বিশেষ করে অতি সম্প্রতি হত্যাকা-গুলোর সাথে আন্তর্জাতিক ইসলামী সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা কিংবা ড্যাস সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় আমরা বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে যেকোন ইসলামী চরমপন্থী গোষ্ঠীর বিস্তার রোধ কল্পে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।” কংগ্রেসে বসে বাংলাদেশে ঢোকার চক্রান্ত করছে আমেরিকা। সাথে নিয়েছে ভারতকে।

বাংলাদেশে পরিকল্পিতভাবে হত্যা হয়। অতঃপর গতানুগতিকভাবেই আইএস (ইসরাইলী সোলজারস) অনলাইনে অপরাধের দায় স্বীকার করে নেয়। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত আইএস যতগুলি সন্ত্রাসী হামলা করেছে, প্রতিবারই আইএস-এর দায় স্বীকার-এর খবর জানা গিয়েছে রিটা কাৎজ-এর পরিচালিত সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ-এর মাধ্যমে। মুলত আই এস সৃষ্টি করা হয়েছে মুসলমান নামধারী সন্ত্রাসীদের দোহাই দিয়ে মুসলিম দেশে আক্রমণ করা। যেমন করেছিল তালেবান সৃষ্টির মাধ্যমে। সম্প্রতি একটা ভাষণে হিলারি ক্লিনটন নিজেই স্বীকার করে বলেছে, তালেবান আমেরিকার সৃষ্টি।

স্নোডেনের ফাঁস করা দলিল থেকে জানা গেছে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কথিত আবু বকর আল বাগদাদীকে এক বছর ধরে ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং মুসলিম দেশগুলোতে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্যই ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা গও-৬, ইসরাইলের মোসাদ ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘঝঅ-এর তত্ত্বাবধানে জন্ম দেয়া হয়েছে ওঝওখ-এর । অর্থাৎ ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের ঔরসে জন্ম নিলো সন্ত্রাসী সংগঠন ওঝওখ। যার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল-এর নেতা ও স্বঘোষিত খলিফা আবুবকর বাগদাদির প্রকৃত নাম ‘শামউন ইয়লুত’ এবং সে ইহুদী বাবা-মায়ের সন্তান বলে জানা গেছে।
প্রশ্ন আসতে পারে আইএস কেন শুধুমাত্র ইসরাইলের শত্রুদের উপর আক্রমণ করে? কেন ইসরাইলের উপর আক্রমণ করে না? কারণ আইএস আমেরিকা আর ইসরাইল সৃষ্টি করেছে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। পূর্বের কোনো মুসলিম দেশ দখল কিংবা মুসলিম সমাজকে বিপদে ফেলতে তালেবানকে ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে করছে আইএস-এর নাম দিয়ে। আইএস মূলত কাফিরদেরই সৃষ্ট দল। এরা মুসলমান নয়। মুসলমান নামধারী কাফির।

যখনই কোনো মুসলিম দেশ আক্রমণ করার ছক তারা আঁকে তখনই দেখা যায় আইএস-এর দোহাই দিয়ে নানা স্থানে হামলা করে। কিন্তু কোনো হামলারই প্রমাণ পাওয়া যায় না। আইএস মুসলিম নাম ধারণ করেছে মুসলমানদের বিপদগ্রস্ত করার জন্য। কোনো কাফির সরাসরি এসে কোনো মুসলমানের দেশ দখল করতে পারবে না। সহজ উপায় তাদেরই সৃষ্ট আইএস জুজু। আইএস সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত তারা কাফিরদের পশম পর্যন্ত স্পর্শ করেনি। অথচ মুসলিম নাম ধারণ করে হত্যা করেছে লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে। কোনো মুসলমান কি অন্য মুসলমানকে হত্যা করতে পারে? কাফিরদের দল ইসলামের যত ক্ষতি করতে পারেনি তার ছেয়ে লক্ষ-কোটিগুণ বেশি ক্ষতি করেছে কাফিরদের গড়া এ সংঘটন।

আশ্চর্যজনকভাবে আইএস ফিলিস্তিনের জনগণ বা হামসকে ইসরাইলি তা-ব থেকে প্রতিরোধে সহায়তা করতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উপরন্তু তারা বলে যে, ফিলিস্তিনের গাজা অধিবাসীদের সিরিয়া এবং ইরানের মতো যারা অস্ত্র এবং মানবিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছে, সেইসব দেশের প্রতিও তারা নজর রাখছে। এই সন্ত্রাসদের দেশ থেকে উৎখাত করার জন্য যখন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র কিনতে চেয়েছিলো, যুক্তরাষ্ট্র নাকচ করে দিয়েছিলো। এ থেকে কি বোঝা যায় না, সন্ত্রাসবাদ দমন নয়, সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করে অস্ত্রবাণিজ্য ও অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করাই যূক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য?

লেখক: চিকিৎসক ও লেখক