বাংলাদেশের বাজারে আধিপত্য চায় ভারতীয় টেক্সটাইল

নিউজ নাইন, ঢাকা: তৈরি পোশাকের অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশের রফতানিমুখী কারখানাগুলোয়ও কৃত্রিম সুতা-কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে। আবার একই প্রবণতা আছে অভ্যন্তরীণ বাজারেও। ভারতের শীর্ষ উত্পাদক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ম্যান মেইড ফাইবারের গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট তাই বাংলাদেশ। বাংলাদেশে আধিপত্য আরো বাড়াতে চাইছে দেশটি। এরই অংশ হিসেবে আজ শুরু হচ্ছে ভারতীয় টেক্সটাইল প্রদর্শনী।

বাংলাদেশে কৃত্রিম সুতার সরবরাহকারী হিসেবে অবস্থান আরো শক্তিশালী করতে রাজধানীতে ভারতীয় টেক্সটাইল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস ও ভারতের দ্য সিনথেটিক অ্যান্ড রেয়ন টেক্সটাইলস এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এসআরটিইপিসি) যৌথ আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শুরু হবে আজ। এতে সহায়ক হিসেবে থাকছে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই)।

প্রদর্শনী উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (কমার্শিয়াল) বিজয় সেলভারাজ। আরো বক্তব্য রাখেন এসআরটিইপিসির ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীনারাইন আগারওয়াল, আইবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট দেওয়ান সুলতান আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রীনারাইন আগারওয়াল ভারত ও বাংলাদেশের ম্যান মেইড ফাইবারের বিদ্যমান ও ভবিষ্যত্ বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে একটি উপস্থাপনা পেশ করেন। এ সময় জানানো হয়, ভারতের কৃত্রিম ও রেয়ন টেক্সটাইল শিল্প দ্রুতগতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। গত পাঁচ বছরে ভারত থেকে বাংলাদেশে কৃত্রিম ও ব্লেন্ড টেক্সটাইলের আমদানি অনেক বেড়েছে। এ আমদানি ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে ভারতীয় টেক্সটাইল পণ্যের আমদানি হয়েছে মোট ৩৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি। ভারতের মোট রফতানির ৫৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ফেব্রিক আমদানি করছে বাংলাদেশ। ফাইবারের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ হলো ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

উপস্থাপনায় আরো বলা হয়, বিশ্বের ১৫০টি দেশে ৬৪০ কোটি ডলার মূল্যের ভারতীয় ম্যান মেইড টেক্সটাইল রফতানি হচ্ছে। এর মধ্যে ২৭ শতাংশ যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৬ শতাংশ আর এশিয়ায় ২০ শতাংশ। ভারতীয় কৃত্রিম টেক্সটাইলের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ব্রাজিল, মিসর, বাংলাদেশ, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও বেলজিয়াম।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। দেশটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বড় বাজার। এ বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চায় ভারত। অভ্যন্তরীণ বাজার ও রফতানিমুখী শিল্প দুই ক্ষেত্রেই ভারতীয় কৃত্রিম সুতা-কাপড়ের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা ভারতের আছে।

আগামীকাল সোমবার ঢাকায় শুরু হচ্ছে ভারতীয় সিনথেটিক টেক্সটাইল পণ্যের প্রদর্শনী ‘ইনটেক্সপো বাংলাদেশ’।সোনারগাঁও হোটেলে ৩০ ও ৩১ মে এই প্রদর্শনী চলবে।

রোববার সংবাদ সম্মেলন করে প্রদর্শনীর বিষয়ে বিস্তারিত জানান আয়োজক ভারতের দ্য সিনথেটিক অ্যান্ড রেয়ন টেক্সটাইলস এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এসআরটিইপিসি) কর্মকর্তারা।

নবমবারের মতো এই প্রদর্শনীর সহ-আয়োজক থাকছে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন। এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ এবং ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) প্রদর্শনী আয়োজনে সহায়তা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে এসআরটিইপিসির ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীনারাইন আগারওয়াল বলেন, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সঙ্গম ইন্ডিয়াসহ ৩০টি শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক তাদের সামগ্রী প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করবে।