বন্ধ হতে পারে দেশের ৫০ শতাংশ হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত প্রায় বন্ধের উপক্রম। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাত আপাতত বন্ধ। কল সেন্টারের কাজ কমেছে ৩৫ শতাংশ। ই-কমার্স সীমিত হয়ে পড়েছে ঢাকার মধ্যে। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়েও কোনও সুখবর নেই। কেবল জরুরি সেবা হিসেবে চালু আছে টেলিযোগাযোগ খাত। মোবাইলের ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবা চালু এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু থাকলেও কেবল মোবাইল ইন্টারনেটেই কিছুটা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহার কমেছে।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, সাম্প্রতিক লকডাউন পরিস্থিতি এই খাতকে একেবারে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতে অনুদান না পেলে দেশের মোট সফটওয়্যার কোম্পানির অর্ধেক বন্ধ হয়ে যাবে, বন্ধ হয়ে যাবে অনেক হার্ডওয়্যার কোম্পানিও (মোবাইল ফোনসহ)। যারা টিকে থাকবে তারা প্রচুর কর্মী ছাঁটাই করবে। যারা চাকরিতে থাকবে তাদের বেতন বকেয়া পড়বে, বেকারত্বের সংখ্যা বাড়বে। দক্ষকর্মীর সংকট তৈরি হবে। ব্যবসায়িক ঠিকানার ভাড়া বাকি পড়বে, অনেক স্থানীয় আইএসপি (পাড়ামহল্লার ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) বন্ধ হয়ে যাবে, কলসেন্টারের কাজ কমবে। সার্বিকভাবে এই শিল্পে অন্ধকার নেমে আসবে। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যাবে কেবল টেলিযোগাযোগ খাতে।

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি শাহিদ উল মুনীর বলেন, প্রতিমাসে দেশে হার্ডওয়্যার পণ্য (মোবাইলফোনসহ) বিক্রি হয় প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকার।

তিনি আরও জানান, তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এমন পরিস্থিতি আরও দুই মাস চললে তারল্য সংকট দেখা দেবে।

এটা দূর করতে গেলে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীরা নিজেরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে না। নিজেরা কাটিয়ে উঠতে গেলে কর্মী ছাঁটাই করতে হবে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিসর ছোট করতে হবে।

ব্যবসার ক্ষতির বিষয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, দেশের ই-কমার্স খাত আট হাজার কোটি টাকার। এই সংকটে প্রতি মাসে এই খাতে ক্ষতি হচ্ছে ৬৬৬ কোটি টাকার বেশি। এই অবস্থা যদি তিন মাস ধরে চলে তাহলে এই খাতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।