ফাঁসির অপেক্ষায় রাজাকার কায়সার

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বি-বাড়িয়া ও হবিগঞ্জে হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-িত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে রাজাকার কায়সার। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক সরকারের সাবেক এ প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত মৃত্যুদ- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও বহাল হওয়ায় দ- কার্যকরে এখন অপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের। তা হয়ে গেলে অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হবে কায়সারকে।

একাত্তরে মুসলিম লীগ নেতা থাকাকালে কায়সার রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে হয়ে ওঠে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একজন বিশ্বস্ত সহযোগী। ‘কায়সার বাহিনী’ নামে নিজে একটি দল গঠন করে এমন সব অপরাধ ঘটাতে থাকে, যেজন্য বি-বাড়িয়া ও হবিগঞ্জে সে ‘কুখ্যাত কায়সার’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। পরে এ ‘কুখ্যাত কায়সার’-ই স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়ার আমলে হয়ে যায় বিএনপির লোক। জিয়া মারা যাওয়ার পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করলে তার গড়া জাতীয় পার্টিতে ভেড়ে এই রাজাকার কায়সার। দল বদলের কৌশলে প্রতিমন্ত্রীও বনে যায় সে। সবশেষ সে ওয়ান-ইলেভেনের সময় পিডিপিতে (প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল) যোগ দেয়।

যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৫ মে কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদ- ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। কায়সার ওই দ-ের বিরুদ্ধে আপিল করলে গত ১৪ জানুয়ারি প্রধান বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারকর আপিল বিভাগের বেঞ্চ মৃত্যুদ-াদেশ বহাল রেখে আদেশ দেয়।

নিয়ম অনুযায়ী, রায় প্রকাশের পর আসামি ও রাষ্ট্র- উভয়পক্ষ এ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে। তাতে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না বদলালে আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারবে। যদি রাষ্ট্রপতি ক্ষমা না করে, তবে রাজাকার কায়সারের মৃত্যুদ- কার্যকরের পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ।

২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৫ মে কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওই রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কায়সারের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। সেই বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদ- ঘোষণা করে আদালত। রায়ে তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪ অভিযোগের সাতটিতে মৃত্যুদ-, পাঁচটিতে যাবজ্জীবন, একটিতে ১০ বছর এবং আরেকটিতে পাঁচ বছর কারাদ- দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পর ওই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।