প্রকৌশলী বরখাস্ত, নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকৌশলী বরখাস্ত, নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেস্ক: গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ নিম্নমানের ও গুণগত না হওয়ায় এক উপজেলা প্রকৌশলী, সহাকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সরকারের অধীন সব নির্মাণাধীন বা নির্মিতব্য কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রকৌশলী টিম দেশের প্রকল্পগুলি পুনঃমূল্যায়ন এবং পরিদর্শন করছে।

পরিদর্শনের অংশ হিসেবে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার, উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেনের (চলতি দায়িত্ব) বিরুদ্ধে মির্জাগঞ্জ উপজেলার কিসমত শ্রীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে নিম্নমানের কাজ এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার গ্রামীণ সড়ক মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ কাজ নিম্নমানের ও গুণগত না হওয়ায় সহকারী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন (প্রেষণে) অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্প, এলজিইডি, সদর দপ্তর, এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে প্রকৌশলী টিম।

অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন এবং সহকারী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে কাজের যথাযথ দেখাশোনা না করায় মুন্সীগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করতে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার, উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন (চলতি দায়িত্ব) তার সাবেক কর্মস্থল পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন, কিসমত শ্রীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বাস্তবায়ন করেননি। বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , যেকোনো সময় ভবনটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বিধায় ভবনটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা প্রয়োজন হবে।

ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ কাজ করা সত্ত্বেও উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন ঠিকাদারের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল দেন এবং ঠিকাদারের যোগসাজশের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় এলজিইডি তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং সরকারের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে মো. সুলতান হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে গুণগতমান নিশ্চিত এবং স্পেসিফিকেশন (কার্পেটিং এর থিকনেস, মাটির কাজ ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী না করা, নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার এং প্রটেক্টিভ ওয়ার্ক এর লোকেশন লেভেল ঠিক না থাকা ইত্যাদি) মোতাবেক কাজ না হওয়ায় সহকারী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করতে বলা হয়েছে।

পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্কিমসমূহের কাজ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী না হওয়ায় এলজিইডি তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়াসহ সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি এবং ঠিকাদারের সাথে যোগসাজগ করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

উল্লেখিত পৃথক অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার, উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন (চলতি দায়িত্ব) এবং সহকারী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন (প্রেষণে) অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্প, এলজিইডি, সদর দপ্তর, ঢাকাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) ২০১৮ এর ১২ বিধি অনুযায়ী সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এছাড়া, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল হাসান দায়িত্বে অবহেলা, প্রকল্পের কাজ যথাযথ মনিটরিং না করায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং সরকারের অর্থের ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি যা বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির পর্যায়ভুক্ত অপরাধ। উক্ত অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার আদেশ দেওয়া হয় প্রজ্ঞাপনে।