পেঁয়াজের পথে হাঁটছে অন্যান্য নিত্যপণ্যও

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা কিছুতেই কাটছে না। দাম বাড়ছে একের পর এক পণ্যের। পেঁয়াজের পর চাল, এরপর তেল, সাথে সবজি, এখন আবার বেড়েছে এলাচসহ অন্যান্য মসলার দাম। বাজারের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে- পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দামকেই যেন সবাই অনুসরন করে হাঁটছে।

বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাই সাহস যোগাচ্ছে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের। এভাবে বাজারের উর্দ্ধমুখীতায় চরম ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।

বাজারে নতুন আলু এসেই শতকের ঘরে। পুরানো আলুও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। এক মাস আগে বাজারে ১৫-২০ টাকার পুরানো আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়।

বেশ কয়েকদিন ধরে ব্যাপক চড়া চালের বাজারও। প্রকারভেদে চালের দাম কেজিতে বেড়ে যায় ৩ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে ভরা মৌসুম হলেও শাক-সবজির দামও বেশ চড়া। কোনো সবজিই পঞ্চাশ টাকার নিচে নেই বলা যায়।

রাজধানীর একটি বাজারে বাজার করতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, এভাবে দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের জন্য এটা সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। পেয়াঁজ, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত বছরের এ সময়ের তুলনায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দামই বেশ বাড়তি। ফলে বাজারে ক্রেতার জন্য কোনো স্বস্তি নেই।

মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী নেয়ামতউল্লাহ বলেন, প্রতিদিন বাজারে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। যে পণ্যই কিনি দাম বেশি। যাঁদের আয় নির্দিষ্ট, তাঁদের জন্য এভাবে চলা কষ্টের।’

এদিকে আবার হঠাৎ উত্তাপ ছড়াচ্ছে মসলা জাতীয় পণ্য এলাচ। পর্যাপ্ত জোগান থাকার পরও খুচরা বাজারে হঠাৎ এই পণ্যটির কেজিতে প্রায় ৬০০ টাকা বেড়েছে। তবে, পাইকারি বাজারে এলাচের কেজিতে মূল্য ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এলাচের মূল্য এমনিতেই চড়া থাকে। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, এ সময়ে বিয়ে, মেজবান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খাবারে অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন।

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থাÍট্রেডিং করপোরেশ অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ নভেম্বর প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকায়। আর মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে অর্থাৎ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকায়।

টিসিবির তথ্য বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ২০.৩৭ শতাংশ। আর গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রতি কেজি এলাচের মূল্য ছিল ১৫৫০ থেকে ২০০০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ৮৩.১০ শতাংশ।

জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এলাচের মূল্য এভাবে যারা বাড়িয়েছেন, তারা মূলত অতি মুনাফালোভী।’ তার মতে, বাজারে কোনও প্রতিযোগিতা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা যে যার মতো যেকোনও পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে ভোক্তাদের সমস্যা হলেও তারা (ব্যবসায়ীরা) ঠিকই পার পেয়ে যাচ্ছে।’