পুলিশের হাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় যুক্তরাষ্ট্রে

পুলিশের হাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় যুক্তরাষ্ট্রে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন দেশে পুলিশের হাতে নাগরিকদের নিহত হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নানা বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে মাথা ঘামালেও তাদের দেশেই পুলিশের হাতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়।

এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার তুলনামূলক তথ্য বিশ্লেষণ করে জানায়, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে এ তিন দেশে পুলিশ হেফাজতে বা পুলিশের গুলিতে মৃত্যু বিবেচনায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময়ে যুক্তরাজ্যে এমন মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। অস্ট্রেলিয়ায় এ সংখ্যা ২১ জন। আর যুক্তরাষ্ট্র এ সংখ্যা ১৩৪৮। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রতি লাখে মৃত্যুর দিক থেকেও সবার ওপরে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতি লাখে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় এমন মৃত্যুর সংখ্যা ২ ও ৫ জন হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ১২ জন। মাসের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে ১৩৫ জন, বা দিনে চারজন পুলিশের হাতে মারা যাচ্ছে।

রহস্যজনক বিষয় হলো, প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ লোক পুলিশের হাতে নিহত হলেও এর কোনো পরিসংখ্যান নেই তাদের কাছে। অনেকটা ইচ্ছে করেই এসব নথি আর্কাইভ করেনা তারা।
এফবিআইয়ের এক তথ্যে দেখা যাচ্ছ, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ৪০৭ জনের ওপর গুলি চালিয়েছে। এর প্রতিটিই কিন্তু চালানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অজুহাতে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এফবিআইয়ের এই পরিসংখ্যানও পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ, একই বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের গুলিতে আরও বেশি মানুষের নিহতের খবর খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কাছেই আছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে সিএনএনের প্রতিবেদনে।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, ২০১৯ সাল যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার চারজন ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। আর এ বিষয়ে কাজ করা সংগঠন ম্যাপিং পুলিশ ভায়োল্যান্স জানাচ্ছে, এ সংখ্যা ১ হাজার ৯৯। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের দেওয়া তথ্য যে সত্য নয়, তা তো এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালকের হাউস কমিটির সামনে দেওয়া বক্তব্যেই পরিষ্কার।
গ্রেপ্তারের সংখ্যার দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই উন্নত বিশ্বের বাকি দেশগুলো। সিএনএন জানাচ্ছে, ২০১৮ সালে দেশটিতে মোট গ্রেপ্তারে সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৬০টি। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ৩২ মার্কিন নাগরিকের একজন গ্রেপ্তার হয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড প্রিজন ব্রিফের দেওয়া তথ্যমতে, কয়েদি সংখ্যার দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্র সবার ওপরে। দেশটির জেলখানাগুলোয় ২০ লাখের বেশি কয়েদি রয়েছে, যা ওয়াশিংটন ডিসি, মিয়ামি ও বোস্টনের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।