পুঁইশাকের যত উপকারিতা

সাস্থ ডেস্ক: গরম একথালা ঝরঝরে ভাতের সঙ্গে কুঁচো চিংড়ি দিয়ে পুঁই শাকের চচ্চরি, একবাটি ঘন ডাল আর লেবু-কাঁচা মরিচ। বর্ণনা শুনেই জিভে জল চলে এলো তো? গাঢ় সবুজ রঙের এই শাক খুবই উপকারী ও সুস্বাদু। পুঁই শাক চচ্চরি ছাড়াও ভাজি কিংবা ডালের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। যেকোনো মাছের পাশে কয়েকটি পুঁই পাতা দিয়ে রেঁধে খেয়ে দেখুন, স্বাদ ভুলতে পারবেন না নিশ্চিত।

পুঁই শাকে আছে প্রচুর ভিটামিন বি, সি ও এ। এর সঙ্গেই আছে এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আর আয়রণ। এছাড়া ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, জিঙ্ক এই সব খনিজ পদার্থ আছে। পুঁই শাকের অনেকগুলো স্বাস্থোপকারিতার মধ্যে একটি হচ্ছে এটি আমাদের শরীরে রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসারের মাত্রা কমায়। অর্থাৎ যারা হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন পাতে রাখুন এই শাকটি। চলুন জেনে নেয়া যাক এর কিছু উপকারিতা-
ব্লাড প্রেসার কমাতে

পুঁই শাক কিন্তু পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস। আমরা জানি পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসার কমায়। পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে। তাই পুঁই শাক কম খাওয়া মানে শরীরে পটাশিয়াম কম আসা আর তার ফলে ব্লাড প্রেসারকে সঙ্গী করা।

ডায়াবেটিস কমাতে

পুঁই শাকে এক ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যার নাম লিপোইক অ্যাসিড। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় আর ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি আর অটোনমিক নিউরোপ্যাথি কমায়। অর্থাৎ বলাই যায় যে এই শাক ডায়াবেটিসের দিক থেকে আপনাকে নিশ্চিন্ত রাখবেই।

ক্যান্সার প্রতিরোধে

আর সব সবুজ সবজির মতো পুঁই শাকে রয়েছে ক্লোরোফিল। এই ক্লোরোফিল ক্যান্সারের জন্য দায়ী কার্সিনোজেনিক প্রভাব আটকাতে খুব ভালো কাজ দেয়। এতে থাকা ফাইবার পাকস্থলী আর কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। তবে পুঁই শাক কিন্তু ক্যানসার দূর করতে বেশ সক্ষম।

হাড়ের গঠনে

আমাদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে ভিটামিন কে। তাই ভিটামিন কে শরীরে কম প্রবেশ করা মানে হাড়ের মজবুতি কমে যাওয়া। পুঁই শাক ভিটামিন কে’র একটি খুব ভালো উৎস। ভিটামিন কে হাড়ের মেট্রিক্স প্রোটিন উন্নত করে। ক্যালসিয়াম ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ইউরিনে ক্যালসিয়ামের মাত্রাও কম করে। হাড়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য তাই পুঁই শাক খান।

হজমের ক্ষমতা বাড়াতে

পুঁই শাক হজমের সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। এটি হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে আর যেহেতু পুঁই শাকে ফাইবার থাকে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেয় না। শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। আর যেহেতু খাবার ভালো করে হজম হয় তাই বদহজমের সমস্যা হয় না।

স্বাস্থ্যকর চুল আর ত্বকের জন্য

পুঁই শাকে আছে ভিটামিন এ, যা আমাদের ত্বকের আর স্ক্যাল্পের তেল নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। ময়েশ্চার ধরে রাখে। অতিরিক্ত তেল বা সিবাম নিঃসরণ হলে ব্রণ হয়। পুঁই শাক যেহেতু এই নিঃসরণ কমায় তাই ব্রণ হয় না। ত্বকের কোষ কোলাজিনের জন্য যে ভিটামিন সি এতো দরকারি, সেই ভিটামিন সি’র উৎস এই পুঁই শাক।

শিশুর বৃদ্ধিতে

বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের যদি নিয়মিত পুঁই শাক খাওয়ানো যায় তাহলে তাদের বৃদ্ধি ভালো হয়। শিশুরা তাদের বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন সবই এই এক পুঁই শাক থেকে পেতে পারে। তাই বাচ্চাদের ছোট থেকেই পুঁই শাক খাওয়ানো অভ্যেস করাতে হবে।