পিলখানা হত্যাকান্ড : মামলার রায় নিয়ে বিপাকে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পিলখানা হত্যাকান্ডের মামলায় ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় (ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর) প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। তিন বিচারকের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চে সম্পন্ন এ রায়টি বিশ্বে বিচার বিভাগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রায় হিসেবেও রেকর্ড করা হয়েছে।

তবে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। কিন্তু রেকর্ড সংখ্যক আসামির মৃত্যুদ-, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং হাইকোর্টের রায়ের পৃষ্ঠা সংখ্যাসহ বেশি হওয়ায় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তবে প্রতিকারের আশায় বিকল্প চিন্তা করছেন মামলা সংশ্লিষ্ট সবাই।

মামলার বিশালতা, ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ বিশেষ করে দ- ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহজে উপলব্ধির বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে যুগান্তকারী এই রায়টি আংশিক মাতৃভাষা বাংলায় লেখা হয়। সদ্য অবসরে যাওয়া বিচারক শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেয়।

২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর টানা দুই দিনে পিলখানা হত্যকা-ের মামলায় হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে। হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১৫২ আসামির মধ্যে ১৩৯ জনের ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়। একইসঙ্গে আটজনের মৃত্যুদ-ের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়।

পাশাপাশি বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জন আসামির মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখে হাইকোর্ট। এদের মধ্যে দুই জন আসামির মৃত্যু এবং ১২ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এছাড়া, জজ আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জন আসামির মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলায় চারজনকে সাত বছর করে কারাদ- এবং ৩৪ জনকে খালাসে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখে হাইকোর্ট। এরপর চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

এদিকে পিলখানা হত্যাকান্ডের মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার অপেক্ষা শেষ হলেও নতুন বিপত্তি শুরু হয়েছে রায়ের সার্টিফায়েড কপি পাওয়া সাপেক্ষে এর বিরুদ্ধে আপিল করার। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও বেকায়দায় পড়েছেন। রায়টি নিয়ে সীমাবদ্ধতার কথা জানালেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, এ মামলায় ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠায় রায় প্রকাশিত হয়েছে। এখন আসামিদের সংশ্লিষ্ট আদালতের রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি নিতে অনেক টাকা খরচ করতে হবে।’ সেক্ষেত্রে এ মামলায় একটি অচল অবস্থা তৈরি হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।