পান চাষে লাভবান কৃষকরা

নিউজ ডেস্ক: পান চাষে লাভবান হিলির কৃষকচলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দিনাজপুরের হিলিতে এবার পানের আবাদ ভালো হয়েছে। গত বছর তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় পানে পচনসহ নানা ধরনের রোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এবার শীতের তেমন প্রকোপ না থাকায় ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় পান চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। তাছাড়া ভারত থেকে পান আমদানি বন্ধ থাকায় চাহিদা বেড়েছে পানের। এতে করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হিলির সীমান্তবর্তী এলাকা ঘাসুড়িয়া ও ঘনশ্যামপুর এলাকায় পানের চাষাবাদ হয়। পান চাষ লাভজনক হওয়ায় এসব এলাকায় দিন দিন পানের আবাদ বাড়ছে। গত বছর ২৮ হেক্টর জমিতে ২৫৫টি পানের বরজে আবাদ হলেও এ বছর তা খানিকটা বেড়েছে। এবার ৩৬ হেক্টর জমিতে ৩৭৫টি পানের বরজে পান চাষ হচ্ছে।

হিলির সীমান্তবর্তী ঘাসুড়িয়া ও ঘনশ্যামপুর এলাকার পান চাষি সাইফুল ইসলাম ও আজিজুর রহমানসহ অনেকেই জানান, গত বছর তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে পানের পচারিসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দিয়েছিল। যার কারণে কৃষকরা লোকশানের মুখে পড়েছিল। এবার শীতের তেমন প্রকোপ না থাকায় ও রোগ বালাইয়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় পানের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে পানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে এলাকায় পান চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।

পান চাষে লাভবান কৃষকতারা আরও জানান, বর্তমানে প্রতি পোয়া পান (৪০ বিরা) ছোট সাইজের আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা দরে এবং বড় সাইজের পান পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পান চাষিদের দাবি, ভারত থেকে পান আমদানি বন্ধ থাকলে তারা পানের ভালো দাম পাবেন।বাজারে পান কিনতে আসা পাইকার নাজমুল হোসেন জানান, আগের তুলনায় পানের দাম বেশ বেড়ে গেছে। প্রতি পোয়া পানে চার থেকে পাঁচশ’ টাকা করে বেড়েছে। এ কারণে পান কিনতে সমস্যা হচ্ছে। আগে রাজশাহী থেকে পান আসতো। এখন পান কম হওয়ায় পানের চাহিদা বেড়েছে।

পান দোকানদার জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, পানের দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছি। বিশেষ করে আমরা যারা দোকানে খিলি পান বিক্রি করি। আগে পানের বিরা প্রতি দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তখন প্রতি খিলি পান পাঁচ টাকা করে বিক্রি করতাম এখন পানের দাম দ্বিগুণ হয়ে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা হলেও আমাদের সেই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে হাকিমপুর  উপজেলায় ৩৬ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। পান একটি লাভজনক ফসল। কৃষকরা দিন দিন পান আবাদের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর যেখানে ২৮ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হতো, এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হেক্টর জমিতে। আর গত বছরে ২৫৫টি পানের বরজে পান চাষ হলেও এবারে চাষ হচ্ছে ৩৭৫টি পানের বরজে। এসব পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে পান চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।