পাখি ক্রয়-বিক্রয়ে লাইসেন্স না নিলে জেল-জরিমানা

মরা গরুর গোশত বিক্রি করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পোষা পাখি লালন-পালন, খামার স্থাপন, কেনা-বেচা ও আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স না নিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। এমন শাস্তির বিধান রেখে ‘পোষা পাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা- ২০২০’ চূড়ান্ত করেছে সরকার। গত ১৩ জানুয়ারি বিধিমালাটি জারি করেছে পরিবেশ, বন ও পানিবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

পোষা পাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া কোনো খামারি পোষা পাখির উৎপাদন, লালন-পালন, খামার স্থাপন, কেনা-বেচা বা আমদানি-রফতানি করতে পারবেন না বা কোন পেট শপ (পোষা পাখি বিক্রির দোকান) পোষা পাখি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না। যারা শখের বসে বাড়িতে বা কোনো প্রতিষ্ঠানে পোষা পাখি লালন-পালন করেন, পাখির সংখ্যা ১০টির বেশি নয়, তাদের শৌখিন পোষা পাখি পালনকারী বলা হয়েছে নীতিমালায়।

এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও পানিবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন বলেন, পোষা পাখি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এখন সবাইকে নীতিমালাটি মানতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে এবং কথা বলে এটি করা হয়েছে।

বিধিমালা কার্যকর হওয়ার আগে কোনো ব্যক্তি পোষা পাখি লালন-পালন, খামার স্থাপন বা আমদানি-রফতানি বা পেট শপ পরিচালনা করে থাকলে তাকে এ বিধিমালা কার্যকর হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নিতে হবে।

বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে লাইসেন্সের মেয়াদ হবে এক বছর। এক বছর পর লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। লাইসেন্স দেবে প্রধান ওয়ার্ডেন (প্রধান বন সংরক্ষক) বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো কর্মকর্তা।

নবায়নের জন্য আবেদনপত্র পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ অধঃস্তন কর্মকর্তার মাধ্যমে আবেদনে উল্লেখিত তথ্যের সঠিকতা যাচাই এবং পাখির সংখ্যা অনুযায়ী স্থান, খাঁচার আকৃতি ও লালন-পালনের উপযুক্ত পরিবেশে রয়েছে কি-না, তা সরেজমিন তদন্ত করে লাইসেন্স নবায়ন করবে।

বন অধিদফতরের মাধ্যমে লাইসেন্স গ্রহণের পর এসআইটিইএসভুক্ত বা সাইটেসভুক্ত (বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণীর বাডুজ্য রোধের কনভেনশন-ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজারড স্পিসিস অব ওয়াইল্ড ফাউনা অ্যান্ড ফ্লোরা) পোষা পাখি রফতানি ও পুনঃরফতানির আগে খামারিকে অবশ্যই সাইটেস সদর দফতর থেকে খামার রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

লাইসেন্স পাওয়ার পর কোনো খামারি পজেশন সার্টিফিকেট (পোষা পাখির মালিকানা-সংক্রান্ত সনদ) ছাড়া কোনো পাখি নিজ মালিকানায় বা দখলে রাখতে পারবে না। পজেশন সার্টিফিকেটের জন্য প্রতিটি পাখির জন্য নির্ধারিত বার্ষিক ফি দিতে হবে। এক বছরের জন্য পজেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে। খামারির বিক্রয় রশিদে হালনাগাদ পজেশন সার্টিফিকেটের নম্বর থাকতে হবে। পজেশন সার্টিফিকেটও প্রতি বছর নবায়ন করতে হবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সরকার যেকোনো সময় লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে। কোনো খামারের লাইসেন্স বাতিল হলে তার পজেশন সার্টিফিকেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

বিধিমালা অনুযায়ী, পোষা পাখি খামারির ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স নবায়ন ফি লাইসেন্স ফির ২৫ শতাংশ। প্রসেস ফি দুই হাজার টাকা। বছরে পজেশন ফিও দুই হাজার টাকা। পজেশন সনদ নবায়ন ফি পজেশন ফির ২৫ শতাংশ। পেট শপের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ও প্রসেস ফি ৫০০ টাকা। বছরে পজেশন ফি দুই হাজার টাকা। খসড়ায় শৌখিন পোষা পাখি লালন-পালনের জন্য লাইসেন্স নেয়ার নিয়ম রাখা হলেও চূড়ান্ত বিধিমালায় সেটা বাদ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ শৌখিন পোষা পাখি লালন-পালনকারীদের লাইসেন্স নিতে হবে না।