পবিত্র রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি ওলামা লীগের

পবিত্র রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি ওলামা লীগের

আহমদ বিলাল হুসাইন

ঢাকা: পবিত্র রমজান মাসে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি ও সারাদেশে পবিত্র শবে মিরাজের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। একই কর্মসূচি থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুণ্ন রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা) উপলক্ষে সরকার যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান আবেগে আপ্লুত হয়েছে এবং সরকারকে অন্তর থেকে দোয়া জানাচ্ছে।

সমাবেশে ওলামা লীগের নেতারা আরও বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ২ (ক) ধারায় বর্ণিত হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ মুসলমান আর অমুসলমানদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল। নামাজ বেহেশতের চাবি। আর মুসলমান পবিত্র নামাজের হাদিয়া লাভ করেছেন পবিত্র শবে মিরাজের উছিলায়। তাই পবিত্র শবে মিরাজ মুসলমানদের কাছে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শবে মিরাজকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া উচিত। যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় ভাবমর্যাদায় পালনসহ এদিন সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী গভীরভাবে প্রত্যাশা করে। এ দাবি পূরণ করলে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সরকারকে আরও ইসলামবান্ধব বলে মনে করবে।’

ইসলামবিদ্বেষী ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুণ্ন রাখতে হবে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, ‘যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তন চায় তারা ইসলাম, মুসলমান ও দেশবান্ধব নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিল নাস্তিক-ব্লগারদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলামবিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। ইসলামবিদ্বেষী ও ইসলামের ওপর মিথ্যা আরোপকারী নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করবে না। তাই ধর্মপ্রাণ দেশবাসী মুসলমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রক্ষার পক্ষে যা সরকারকে একান্তভাবে মনে রাখতে হবে।’

এ সময় বক্তারা লিখিত বক্তব্য থেকে বলেন, ‘ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ প্রচারে শীর্ষস্থানীয় সামহোয়্যার ইন, আমার ব্লগ, মুক্তমনা, নাগরিক, প্রথম আলো ব্লগ, ধর্মকারী, নবযুগ, সচলায়তন, অগ্নিসেতু ইত্যাদি নামের ব্লগগুলো অনবরত দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর মদদে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের উসকে দিচ্ছে। এদের অশুভ অপতৎপরতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুণ্ন রাখতে হবে ও এদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে হবে।’

মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার ও মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ। এ সময় সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।