পথে পথে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশজুড়ে অঘোষিত ‘লকডাউনে’ প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দেশজুড়ে। এর মধ্যেই বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে দেশের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন গার্মেন্টসস শ্রমিকরা।
বুধবার রাজধানীর উত্তরা, বিমানবন্দর, বাড্ডা, মিরপুর, দারুসসালামসহ অন্তত ১০টি স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাজধানীর বিমানবন্দর গোল চত্বর ও জসীম উদ্দীন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে রেদওয়ানটেক্স অ্যান্ড অ্যাপারেলস গার্মেন্টসের শ্রমিকরা।

রাজধানীর বাড্ডায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শামসুর রিজিয়া ফ্যাশনস লিমিটেডের শ্রমিকরা।

বুধবার সকালে ভাষানটেক থানাধীন কাফরুল এলাকার মিনি সুপার মার্কেটের পাশে চিটাগাং ফ্যাশন নামে একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা এক মাসের বেতন ও দুই মাসের ওভারটাইমের বকেয়া পরিশোধের দাবি জানান।

শ্রমিকরা জানান, পুলিশের আশ্বাসে এর আগেও রাস্তায় নেমে ফিরে গেছেন তারা। তবে এবার বেতন-ভাতার সমস্যা মিটিয়ে তারা ঘরে ফিরবেন। তাদের ভাষ্যমতে, গার্মেন্টস বন্ধ। কিন্তু তার আগের বেতন ও ওভারটাইমের বকেয়া মেটায়নি কর্তৃপক্ষ।
বেতন-ভাতার দাবিতে মিরপুর থানাধীন দারুসসালাম এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা বুধবার সকাল থেকেই সড়ক অবরোধ করে রাখে।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান জানান, আকিফ গার্মেন্টস, আরএসএফ ফ্যাশন্স, এমইসি ফ্যাশন্স, লুমিয়া প্রিন্টার্সসহ বেশ কয়েকটি ছোট ছোট গার্মেন্টস শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে বেতন ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। পুলিশের কোনো কথাই তারা শুনছে না। আবার ছোট ছোট কয়েকটি গার্মেন্টস শ্রমিকরা একত্রিত হওয়ায় গার্মেন্টস মালিকদের খোঁজই পাওয়া যাচ্ছে না।

দুপুর ১২টা থেকে মিরপুর-১২ নম্বর এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকরা জানায়, বকেয়া বেতন না দিয়েই গার্মেন্টস মালিকরা উধাও হয়ে গেছেন। তাই নিরুপায় হয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে বেতনের দাবীতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে জানায়।

এদিকে, সম্প্রতি গার্মেন্টস সেক্টরে ছাঁটাই চাকরিচ্যুতি বন্ধ এবং বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের বিভিন্ন শিল্প অঞ্চলে গার্মেন্টস সেক্টরে প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের ছাঁটাই এবং চাকরিচ্যুতি চলছে। কোনো কোনো কারখানায় শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন থেকে ঠকানোর অসৎ উদ্দেশ্যে লে-অফ-এর নোটিশ দিয়ে কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে। অথচ সরকার গার্মেন্টস মালিকদের জন্য বিরাট অংকের আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রণোদনার আওতায় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন-ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপরও দেশের মুনাফালোভী গার্মেন্টস মালিকেরা শ্রমিকদের বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ ঘোষণা করছে।