পঞ্চম প্রজন্ম যুদ্ধে পাকিস্তান জিতেছে:ভারতীয় জেনারেল

আন্তার্জাতিক ডেস্ক:হাইব্রিড যুদ্ধে পাকিস্তান যে ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে সে কথা স্বীকার করেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার সৈয়দ আতা হাসনাইন।

সাবেক একই ভারতীয় লে. জেনারেল একটি ব্রিটিশ থিংকট্যাংককে বলেন, কিভাবে ‘পঞ্চম প্রজন্মের’ যুদ্ধ করতে হয় তা পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর)-এর কাছ থেকে তাদেরকে [ভারতকে] শিখতে হবে ।

তিনি বলেন, আইএসপিআর প্রমাণ করেছে যে হাইব্রিড যুদ্ধে মিডিয়া খুবই কার্যকর একটি হাতিয়ার। এর মধ্যে রয়েছে তথ্যযুদ্ধ, যেখানে পাকিস্তান অত্যন্ত পেশাদারী দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

হাসনাইন বলেন, আধুনিক সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রচলিত যুদ্ধে জয়ী হওয়া অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রেরও বিষয়টি বুঝতে ১৮ বছর লেগেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলা সম্পর্কিত ভারতীয় ডসিয়ার আগাগোড়া পর্যালোচনা করেছে বলে ঘোষণা দেয়ার কয়েক দিনের মাথায় ভারতীয় জেনারেলের কাছ থেকে এই মন্তব্য পাওয়া গেলো। পাকিস্তান জানায় যে, নয়া দিল্লি যেসব স্থানে সন্ত্রাসী ঘাঁটি থাকার কথা বলেছে সেসব জায়গায় এ ধরনের কিছু নেই। তাছাড়া ভারতীয় নথিতে যেসব ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাদের কাউকেই পুলওয়াম হামলার সঙ্গে যুক্ত করা যায়নি।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর উল্লেখ করে, ৫৪ জনকে আটক করে তদন্ত চালানো হয়েছে। কিন্তু তাদের কারো সঙ্গেই পুলওয়ামা হামলার কোন যোগসাজশ পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে ভারত যে ২২টি সুনির্দিষ্ট লোকেশনের কথা বলেছে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হয়েছে। সে ধরনের কোন শিবির সেখানে নেই। ভারত চাইলে পাকিস্তান ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখে আসার অনুমতি দেবে।

মন্ত্রণালয় আরো জানায়, তদন্ত অব্যাহত রাখার জন্য ভারতের কাছ থেকে আরো তথ্য ও কাগজপত্র প্রয়োজন হবে এবং পাকিস্তান এই প্রক্রিয়াকে একটি যৌক্তিক সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ভারতকে ‘দায়িত্বহীন মনোভাব’ প্রদর্শনের দায়ে অভিযুক্ত করেন এবং ‘ভারতীয় আগ্রাসনের’ তাৎক্ষণিক ও উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য ইসলামাবাদের প্রশংসা করেন।

আলভি বলেন, পুলওয়ামা হামলার পর কোন প্রমাণ ছাড়াই ভারত পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে। ভারত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান না দেখিয়েই পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে।

১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতি জঙ্গি হামলায় ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হয়। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগ্রুপ জয়শে মোহামদ (জেইএম) এর কৃতিত্ব দাবি করে।

জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে কথিত জেইএম প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালায়। কিন্তু ইসলামাবাদ দাবি করে যে ভারতীয় বিমান যেখানে হামলা চালিয়েছে সেখানে কোন জঙ্গি ঘাঁটি নেই। ভারতীয় বোমা হামলায় কিছু পাইন গাছের ক্ষতি হয়েছে।

এই উত্তেজনার জের ধরে ২৭ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে বিমানযুদ্ধ হয়। এতে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী দুটি ভারতীয় জঙ্গিবিমান ঘায়েল করে এবং একজন পাইলটকে আটক করে। পরে অবশ্য শুভেচ্ছার মনোভাব দেখিয়ে আটক পাইলটকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।