রাঙ্গামাটিতে উপজাতী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মুকুল চাকমা নিহত

ইউপি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সংবাদ সম্মেলনে শঙ্কা প্রকাশ করার সাত ঘণ্টার মধ্যে রাঙামাটির নানিয়ারচরে মুকুল ওরফে মকবুল চাকমা নামে এক পাহাড়িকে গুলি করে হত্যা করেছে আঞ্চলিক দলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

শুক্রবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় জেলার নানিয়ারচর উপজেলা সদরের আমতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুকুল ওরফে মকবুল চাকমার বড় ভাই তরুণ কান্তি চাকমা জানান, বিকেলে সাড়ে পাঁচটার সময় আমতলী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় পেছন দিক থেকে আমার ভাইকে গুলি করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। এ সময় সে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলেও তার পিঠের পেছনে ডান পাশে একটি গুলিবিদ্ধ হয়। আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, নিহত মুকুল ওরফে মকবুল চাকমা গত সাত মাস আগে ইউপিডিএফ থেকে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপে যোগ দেয়। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলটির মনোনীত প্রার্থী বিক্রম চাকমার হয়ে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় মকবুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বজনরা দাবি করেছে।

এদিকে, নিহতের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা নানিয়ারচর থানা পুলিশের এসআই দীপক জানান, নিহত মুকুল ওরফে মকবুল চাকমা মৃত্যুর আগে নানিয়ারচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় উপস্থিত সকলের সামনেই জানিয়েছে যে, চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফের লোকরা তাকে গুলি করেছে।

এসআই দীপক আরো জানান, লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে কীভাবে এবং কেন মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় নানিয়ারচর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।

এ ঘটনায় মুকুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান জানান, নিহত মকবুল চাকমা আগে  ইউপিডিএফ করতেন। কয়েকমাস আগে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপে যোগ দেয়। সম্ভবত এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে জেএসএস-ইউপিডিএফের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার মাত্র সাত ঘণ্টা আগেই সংবাদ সম্মেলন করে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে অস্ত্রধারীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাঙামাটির নেতারা।

দলটির পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি না হলে যেকোনো সময় আসন্ন ৬ষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচন বর্জন করতে পারে রাঙামাটির আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাত্র ৭ ঘণ্টা সময়ের ব্যবধানে নানিয়ারচরে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে একজন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ক্ষমতাসীনদের আশঙ্কাই প্রমাণিত হলো বটে।