নতুন জাতের পেঁপে চাষে মিল্লাদের সাফল্য

নতুন জাতের পেঁপে চাষে মিল্লাদের সাফল্য

সিলেট সংবাদদাতা: সুইট লেডি পেঁপের বাম্পার ফলনে খুশি হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জের পূর্ব বিরামচর গ্রামের আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদ। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি কৃষি কাজ করছেন।

জানা যায়, প্রথমে চাষি আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদ সুইট লেডি জাতের পেঁপের চারা সংগ্রহ করেন রংপুর থেকে। প্রস্তুত করেন নিজেদের প্রায় ৩৬ শতক পতিত জমি। পরে ৩০০ পেঁপের চারা রোপণ করেন। রোপণের প্রায় তিন মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি করে পেঁপে ধরে। একেকটা পেঁপে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের। সুইট লেডি জাতের পেঁপে চাষ করে এলাকায় সবার দৃষ্টি কেড়েছেন এ চাষি।

আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদ জানান, তার পেঁপে বাগান করার বহু দিনের শখ ছিল। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান তাকে সহায়তায় করেন। বড় ভাই মাহমুদ কাদির তালুকদার বাচ্চু, আব্দুল জব্বার তালুকদার মুরাদও তাকে বাগান করতে উৎসাহ দেন। বাগান করতে চারা, সার, বালাইনাশক, রোপণ, আগাছা পরিষ্কার, জমি তৈরি, লেবার খরচসহ প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখনই গাছ থেকে সপ্তাহে ২/৩ বার পেঁপে সংগ্রহ করা যাচ্ছে। কাঁচা পেঁপে পাইকারি মূল্যে কেজি ৩৫ টাকা করে বিক্রি করছেন। এক বছরে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাগান করার পর থেকে এপর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি হয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে দেড় বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেলে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছেন তিনি।

এদিকে মিল্লাদের চাষাবাদে সফলতা দেখে এলাকার অনেক চাষি পেঁপে চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও জমি প্রস্তুত করছেন। রোপণ করবেন এ জাতের পেঁপে।
এলাকার চাষি শাহজাহান মিয়া বলেন, সঠিক পরামর্শ পেয়ে শ্রম দিলে কৃষি কাজে সফল হওয়া সম্ভব। যেমনটা প্রমাণ মেলেছে চাষি আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদের কাছ থেকে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, হাইব্রিড সুইট লেডি পেঁপে ভাইরাস প্রতিরোধী। চাষি আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদকে আমি পরামর্শ দেই। পরে ৩৬ শতক পতিত জমিতে পেঁপের চাষ করেন। পেঁপের ফলনে এসেছে সফলতা। তিনি আরও বলেন, তুলনামূলকভাবে কাঁচা পেঁপের চেয়ে পাকা পেঁপে বিক্রি লাভজনক। প্রতিটি পাকা পেঁপে গড়ে ১০০ টাকা করে বিক্রি করা সম্ভব। এমন ফলনে যে কেউ এক বছরেই হবেন লাখপতি।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তমিজ উদ্দিন খান বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মাটি ফল চাষে বেশ উপযোগী। এখানে ধান চাষের চেয়ে ফল চাষ অনেক বেশি লাভজনক হয়। তাই এলাকার চাষিদের পেঁপে চাষে ব্যাপকভাবে আগ্রহী ও উৎসাহিত করার জন্য মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। তিনি আরও বলেন, সুইট লেডি পেঁপেটি ভাইরাসমুক্ত ও লাভজনক একটি ফসল। এ ধরনের ফসল চাষ করে যে কেউ লাভবান হতে পারবেন। এর প্রমাণ দিলেন চাষি আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদ।