নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিশুখাদ্য : তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ৫০ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক :মেয়াদোত্তীর্ণ শিশুখাদ্য বিক্রি ও পণ্যের মেয়াদ ছয় মাস থেকে এক বছর বাড়িয়ে বাজারজাত করার অপরাধে রাজধানীর গুলশান এলাকার তিন প্রতিষ্ঠানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা এবং দুইজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুলশান-১ এর ডিসিসি মার্কেট সংলগ্ন ৭নং সড়ক এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব-১ ও বিএসটিআইয়ের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম।
অভিযানে দেখা যায়, মাওলা ট্রেডার্সে ভিনেগার, জুসসহ বেশ কয়েক ধরনের খাদ্যপণ্যের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৮ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের বিভিন্ন সময়ে কিন্তু সেগুলোর তারিখ মুছে নতুন করে তারিখ দেয়া হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯। নতুন লাগানো তারিখটি মোছার পর আসল তারিখটি বের হয়ে যায়।

আদালতে উপস্থিত বিএসটিআই কর্মকর্তা রিগ্যান বৈদ্য জানান, এটি মারাত্মক অপরাধ এবং মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মালিক মো. আনোয়ার হোসেন আদালতের নিকট দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান এবং এ অপরাধের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পাশের ভবনে অবস্থিত জে কে মার্কেটিংয়ে গিয়ে দেখা যায়, চীন থেকে নিম্নমানের চকলেট, জেলি, আচারসহ অন্যান্য শিশুখাদ্য আমদানি করে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে নকল করে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। তাছাড়া যে চকলেটের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ১১ নভেম্বর ২০১৮ সালে কিন্তু তা প্যাকেটজাত করে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেয়া হচ্ছে ৩০ এপ্রিল ২০২০। সেখানে পাওয়া যায় মেয়াদের তারিখ বসানোর তিনটি স্বয়ংক্রিয় মেশিন। আদালত এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক শেখ মোহাম্মদ রাশেদ এবং ম্যানেজার মাঈনুল হাসানকে এক বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

তাছাড়া একই ভবনের তিনতলায় অবস্থিত মেসার্স রাতুল স্টোরকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যসমূহ ডেমরায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলে ধ্বংস করা হয়।

র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম বলেন, এই ধরনের প্রতারণা সহজে ভোক্তা বা ক্রেতা ধরতে পারেন না। সেই সুযোগটাই গ্রহণ করে মোটা অঙ্কের টাকা লাভ করে আসছিল প্রতিষ্ঠান তিনটি। আমরা রমজান উপলক্ষে অসাদু ব্যবসায়ীদের মেসেজ দিচ্ছি, আইনের মধ্য থেকে ভোক্তা অধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় ব্যবসা করুন। যার বিরুদ্ধেই অভিযোগের সত্যতা মিললে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।