ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ধান চাষে সফলতা

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ধান চাষে সফলতা

বরিশাল সংবাদদাতা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বরিশালের বিজ্ঞানীরা কোনো প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই ২০১৯-২০ সালের বোরো মৌসুমে ১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধান চাষাবাদে সফল হয়েছেন। ধান চাষ করার সময় কৃষকরা সাধারণত গড়ে তিনবার কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন।

এতে করে ধান চাষে কৃষকদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবেশেরও ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। কৃষকরা মূলত ধানের জমিতে মাজরা পোকা, পাতামোড়ানো পোকা, বাদামি গাছফড়িং ও গান্ধি পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় মূলত সাগরদী ও চরবদনা এ দুটি ফার্মের সমন্বয়ে গঠিত। গত বোরো মৌসুমে দুটি ফার্মে কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই মৌসুমের বিভিন্ন জাতের ধান যেমন, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৪৭, ব্রি ধান৫৮, ব্রি ধান৬৭, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮৮, ব্রি ধান৮৯ এর সফল আবাদ করা গেছে। বীজতলা থেকে ধানের জমিতে চারা রোপণের ১০ দিন পর প্রতি ১০০ বর্গমিটারে একটি করে গাছের ডালপালা পুঁতে পার্চিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

চারা রোপণের ১৪ দিন পর থেকে ধানের শীষ বের হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার হাতজাল দিয়ে সুইপিং করে ক্ষতিকর ও উপকারি পোকার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কোন জমিতে ক্ষতিকর পোকার সংখ্যা বেশি দেখা গেলে প্রয়োজনে সকল জমিতে সুইপিং এর মাধ্যমে পোকা ধরে মেরে ফেলা হয়। সেই সাথে উপকারি পোকা জমিতে ছেড়ে দেয়া হয়। এতে করে, ধানের জমিতে উপকারি পোকামাকড় সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন করে ফেলে।

এ প্রযুক্তিটি সফল বাস্তবায়নের কারিগর ব্রি, বরিশালের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কীটতত্ত্ববিদ মনিরুজ্জামান কবির বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে মূলত মাজরা পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। সকালের নরম আলোয় মাজরা পোকার মথ (পূর্ণবয়স্ক মাজরাপোকা) ধানের পাতার উপরের দিকের পাতায় বসে থাকে। গবেষণায় দেখতে পাই, সকাল সকাল হাতজাল দিয়ে সুইপ করলে পোকা দমনে সফলতা বেশি পাওয়া যায়।

এ প্রযুক্তিটি সম্পর্কে ব্রি, বরিশালের প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলমগীর হোসেন জানান, গত বোরো মৌসুমে এ প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে আমরা আশানুরূপ সফলতা পেয়েছি। পরিবেশবান্ধব এ প্রযুক্তিটি কৃষকদের মাঠে দ্রুত সম্প্রসারণ দরকার।