ধানের ফলন ও দামে খুশি কৃষক, রয়েছে শঙ্কাও

সরকারের ধান ক্রয়ের ধীরগতিতে চিন্তিত কৃষক

নওগাঁ সংবাদদাতা: নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার গ্রামে গ্রামে চারদিকে তাকালেই চোখে পড়ে মাঠ ভরা ধান। এখনও সাড়ে আটশ টাকা মণ বাজারমূল্যকে মোটামোটি ভাল বলছেন তারা। তবে কৃষকের স্বপ্ন, সরকার নির্ধারিত এক হাজার ৪০ টাকা মণপ্রতি দরে ধান বিক্রির। চালকলগুলোর সিন্ডিকেটের কারণে ধানের দরপতনের শঙ্কাও আছে তাদের।

এবছর বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ৩০ হেক্টর ধান উৎপাদন হয়েছে, প্রতি ১ হেক্টরে ৭.২ মেট্রিকটন। শ্রমিক সংকটের মাঝেও ধানের বাম্পার ফলনে ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি।। তবে দালাল আর সিন্ডিকেটের দৌরাত্বের কারণে প্রতি বছরের মত এবারও প্রান্তিক কৃষকরা সরকারি মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারার অভিযোগও রয়েছে।

কৃষক আবু রাইহান বলেন, এবার বিগাহারিতে ধান পেয়েছি ৩৫-৪০ মন। সবমিলে খরচ পরেছে প্রায় ১২-১৪ হাজার টাকা। বাজারে প্রকার ভেদে কাটারি ভোগ ধানের মুল্য ৮২০-৮৭০ টাকা, জিরা ৯০০ টাকা। এবার ধানের বাম্পার ফলনে ভালো দাম পেলাম। তবে সরকার নির্ধারিত ১ হাজার ৪০ টাকা দরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হলে কৃষকরা লাভবান হতো আরেকটু বেশি।

পৌর ৮ নং ওয়ার্ড জয়জয়পুর গ্রামের কৃষক আবুল বাশার বলেন, প্রথম প্রথম ধানের দাম ভালো থাকে। তারপর পাইকারি ব্যবসায়ী দালাল আর সিন্ডিকেটের কারণে শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে লোকসান দিয়ে কম দামে কৃষকের ফসল বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া এ বছর ধান কাটার শ্রমিক সংকটে মজুরিও বেশি।

পূর্ব বাজার ধান ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, দুদিন আগে ধানের দাম বেশি ছিল। সামনে ঈদ আসায় ধানের দাম একটু কমতে শুরু করেছে। মিলাররা ধান না নেওয়ার কারণে আমরাও কিনতে পারছিনা। মিলারদের উপরেই ধানের দাম ওঠা-নামা নির্ভর করে। এখানে আমাদে করার কিছুই নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, এবছর বোরো মৌসুমে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সঠিক পরামর্শ প্রদান এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের ঠার্গেট অনুযায়ী এবছর ১৬ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী উপজেলায় মাঠে থাকা পুরো ১৬ হাজার ৩০ হেক্টর জমির ধান কৃষক যাতে নির্বিঘ্নে কেটে ঘরে তুলতে পারে, তার জন্য ৭টি কম্বাইন হারভেষ্টার ও ৯টি রিকভার ধানকাটা মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এতে কৃষক ২ হাজার টাকায় ৪৯ শতক জমির ধান খুব সহজেই কেটে নিতে পারছেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ১ হাজার ৪০ টাকায় কৃষক যাতে ধান বিক্রয় করতে পারেন, সেজন্য প্রতিটি ইউনিয়নে লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছারাও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক আনার ব্যবস্থা করেছি।