দিশেহারা কৃষক, আগাম বন্যার হুমকি

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: গেলো টানা তিন বছর অসময়ে বন্যার কারণে ফসলের মাঠ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হতাশা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি কৃষকরা। এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড দিয়েছে আরো এক অশনি সংকেত। এবারো অকাল বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়ে ফসল কেটে ঘরে তোলার অনুরোধ জানিয়েছে সরকারি এই দপ্তর।

একদিকে প্রশাসনিক বন্দিদশা আর অন্যদিকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হওয়ার পূর্বেই অকাল বন্যার আশঙ্কায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অজানা আতঙ্ক। এবারও যদি মাঠের ফসল তলিয়ে যায় তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ১৭ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘালয় এবং ভারত অববাহিকায় ১৫০-২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে করে হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় নদীর পানি বিপদসীমাও অতিক্রম করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলের বোরো ধান অতি দ্রুত কাটার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে ডুবন্ত বাঁধের কাজ বাস্তবায়নের সঙ্গে মাঠপর্যায়ে সবাইকে নিজ অধিক্ষেত্রে অবস্থান পূর্বক বাঁধের নিবিড় মনিটরিং জোরদার নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামের কৃষক আশিক মিয়া বলেন, গেলো দুই বছরের লোকসান এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এ অবস্থায় যদি এবারো ফসল তলিয়ে যায় তাহলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
বানিয়াচং উপজেলার কৃষক তৌফিক মিয়া বলেন, কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হলেও পুরোদমে মাঠে নামেনি সবাই। চলমান পরিস্থিতিতে একদিকে ধান কাটার শ্রমিক সংকট। আবার যদি আগাম বন্যা হয় তাহলে আমাদেরকে রাস্তায় বসতে হবে।