দিল্লীতে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা: মুসলিমদের চোখে এসিড নিক্ষেপ, লাশের পরিচয় গোপন

‘দিল্লির দাঙ্গায় মুসলিমবিরোধী ভূমিকায় ছিল পুলিশ’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের দিল্লীতে ৫ দিন ব্যাপী যে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা চলছে তাতে ব্যাপক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মুসলমানরা। নতুন করে বেছে বেছে মসজিদে আগুন দিচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। পাশাপাশি মুসলিম যুবকদের পিটিয়ে হত্যার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল দিল্লির মুস্তাফাবাদের ব্রিজপুরি এলাকায় আরেকটি মসজিদে আবার হামলা চালিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা। শুধু তা-ই নয়, মসজিদে ঢুকে নামাজরত মুসল্লিদের গুলি চালানো এবং রড দিয়ে বেধড়কভাবে পেটানোর ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরও চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এছাড়া সেখানকার মাদ্রাসা, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনায়ও হামলা চালাতে বাদ রাখেনি উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।

এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা নতুন এক তথ্য দিয়েছে। তারা বলেছে, আহত অনেক মুসলমানের চোখে অ্যাসিড ঢালা হয়েছে। অন্ধ হয়ে গেছে অনেকেই। কারো পুরো মুখম-ল ঝলসে গেছে।

ভারতের একটি দৈনিকের অনলাইন জানাচ্ছে, মুস্তাফাবাদ থেকে বেশ কিছু আহত মুসলমান এসেছেন হাসপাতালে। তাদের অনেকের চোখে অ্যাসিড ঢালা হয়েছে। দৃষ্টি হারিয়েছেন চার জন। খুরশিদ নামে এক জনের দু’চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। তেগ বাহাদুর হাসপাতাল থেকে লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে আসার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সও পাননি তিনি। গিয়েছেন রিকশায়। দুই চোখ-সহ পুরো মুখ ঝলসে গিয়েছে ওয়কিলের।

শুধু তাই নয়, হতাহতদের ধর্মীয় পরিচয় কী, তা নিয়ে প্রশাসন একেবারে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। অর্থাৎ নিহত মুসলমানদের হিন্দু হিসেবে অপপ্রচার চালাতে দেখা গেছে। তেগবাহাদুর হাসপাতাল নিহতদের নাম-ধাম পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমকে জানাতে সরাসরি অস্বীকার করেছে।

এক স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছে, যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লির তেগবাহাদুর হাসপাতালে যাই, মর্গের সামনে শুধু গোটাকয়েক মুসলিম পরিবারের ভিড়ই চোখে পড়েছে। হিন্দু পরিবারের সদস্যদের কিন্তু সেখানে একেবারেই চোখে পড়েনি। তবে এযাবৎ নিহতদের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা যে অনেক বেশি (অন্তত দ্বিগুণ) তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু প্রশাসনের নীরবতাই বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা এ ব্যাপারে কোনও তথ্য সামনে আসতে দিতে রাজি নয়। পাশাপাশি ব্যাপক সংখ্যায় মুসলিমদের এই প্রাণহানিও এটাই প্রমাণ করছে তারা একটা পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ আক্রমণের শিকার হয়েছে। মুসলিম মহল্লাগুলোতে বেছে বেছে মসজিদ-মাদ্রাসা বা কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে আক্রমণ চালানো হয়েছে।