তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত সাড়ে ১৫ লাখ

তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত সাড়ে ১৫ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমানে দেশে ১৫ লাখেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষ তামাক সেবনের কারণে এবং ৬১ হাজারেরও অধিক শিশু পরোক্ষভাবে তামাকের প্রভাবে প্রাণঘাতী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। ২০১৮ সালের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বেগম শামসুর নাহারের (মহিলা আসন-১৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, এ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে- তামাকজনিত রোগব্যাধি ও অকাল মৃত্যুর কারণে দেশে প্রতিবছর ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয় হয় যা ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জাতীয় আয়ের ১ দশমিক ৪ শতাংশ। তিনি বলেন, জনগণকে তামাকজাত রোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য যানবাহন, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে ও গণপরিবহনে ধূমপানে যে নিষেধাজ্ঞা আছে তা কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে ৩২১ জন জেলা/উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে প্রশিক্ষু দেয়া হয়েছে। এছাড়া ট্রাস্কফোর্স কমিটি গঠন করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২০১৯ সালে ৮৬৬টি ঘটনার বিপরীতে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ২০১৯ সালে মিডফোর্ডসহ সারা দেশে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২১৪৫টি মামলা দায়ের করে ১২ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার ৪৮৪ টাকা জরিমানা, ৩৯ জনকে কারাদ-, ৪৪টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। আনুমানিক ৩১.৭৬ কোটি টাকা মূল্যের নকল ভেজাল ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের নির্দেশে আনুমানিক ৪৬.৬২ কোটি মূল্যের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়।

তিনি বলেন, গত বছর এ কারণে ৪১টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল, তিনটি প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন স্থগিত এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৯টি ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া মানবহির্ভূত হওয়ায় ৯টি ওষুধের নিবন্ধন বাতিল ও ড্রাককন্ট্রোল কমিটি (ডিসিসি) দ্বারা ৯৯টি জেনেরিক ওষুধ বাতিল করা হয়েছে।

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানয়ার প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে বর্তমানে ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বিএমএডিসি সময়ে সময়ে পরিদর্শন করে। এছাড়া মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান মনিটরিং করা হয়। একই সঙ্গে অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ মেডিকেলে ডেন্টাল কাউন্সিল হতে মনিটরিং করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম নেয়া হয়।

একই এমপির অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর শুধুমাত্র এলোপ্যাথিক ওষুধের অনুকূলে মূল্য সনদ প্রদান করে। ১৯৯৪ সালের আদেশ ও মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার তালিকাভুক্ত ১১৭টি জেনেরিকের বিভিন্ন ডোজেস ফর্মের ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সরকার নির্ধারণ করে থাকে।