তবুও পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত

তবুও পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের একাধিক পদক্ষেপের পরও পতন অব্যাহত রয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ইতিবাচক ধারায় ফেরেনি দেশের পুঁজিবাজার। এ অবস্থায় টানা চার কার্যদিবসে ডিএসইর সূচক কমেছে ৯১ পয়েন্ট। লেনদেনও ঘুরপাক খাচ্ছে চারশ কোটির ঘরে।

তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আস্থার কিছুটা সঙ্কট থাকলেও কোম্পানিগুলো আয় কম দেখানোর কারণে কিছুটা নেতিবাচক ধারা রয়েছে পুঁজিবাজারে। কোম্পানিগুলো যদি শেয়ার প্রতি আয় ভালো দেখাতো তাহলে এই মুহূর্তে বাজার অনেক পজিটিভ থাকতো।

এ ব্যাপারে অর্থনীতিবীদ আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আস্থা সঙ্কট তেমন একটা নেই। এখন বাজারে যে সমস্যাটা রয়েছে সেটি হলো ফান্ডামেন্টাল সমস্যা। তিনি বলেন, অনেক কোম্পানি আছে প্রফিট বেশি করছে অথচ কম দেখাচ্ছে। এতে করে সেইসব কোম্পানিগুলোর শেয়ার মানুষ কিনছে না। ফলে সূচকের পতন হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

এ অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, কোম্পানিগুলো প্রফিট দেখানোর ক্ষেত্রে কোনো কারসাজি যাতে না করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন।

এদিকে বাজারে বড় কোম্পানিগুলো সঠিক ভূমিকা রাখছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বড় কোম্পানিগুলো প্রফিট অনেক করছে অথচ বিনিয়োগকারীদের তেমন কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। এতে করে বিনিয়োগকারীরা সেই সব কোম্পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে বিএসইসির দুর্বলতার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, বাজারে আস্থার সঙ্কট রয়েছে। সঙ্কট দূর করতে গেলে ফর্মূলা তৈরি করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইস্যুকৃত মূল্যের নিচে যেসব কোম্পানির শেয়ার রয়েছে সেগুলো বাই ব্যাক করার দাবি করেন তিনি।

কয়েকদিন ধরে বাজারে টানা উত্থান হয়। সে অবস্থা স্থিতিশীল না হতেই গত কয়েকদিন ধরে সূচক নিম্নমুখী। তবে এটি স্বাভাবিক বলে মনে করছেন ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী।

এখন বাজারে আস্থা সঙ্কট নেই দাবি করে ডিএসইর এ পরিচালক বলেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ার প্রতি আয় কিছুটা কম থাকার কারণে বাজারে একটু নেতিবাচক দেখা দিয়েছে। তবে এটি ঠিক হয়ে যাবে।

এদিকে বাজার বিশ্লষণে দেখা যায়, আগের সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বড় পতনে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন।

এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৮৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট ও ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০১২ ও ১৪৯২ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা আগের দিন থেকে ১৪ কোটি টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৭৬ কোটি টাকার। ডিএসইতে ৩৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে, কমেছে ২৭১টির এবং ৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।