ঢাকার কিছু এলাকায় কুরবানির পশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আইনি নোটিশ

পশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আইনি নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  জাপান গার্ডেন সিটিসহ রাজধানীর আরও কিছু ফ্লাট মালিক সমিতি ও হাউজি সোসাইটি পবিত্র কুরবানির পশু প্রবেশ ও কুরবানি করতে নিষেধাজ্ঞামূলক নির্দেশনা দিয়েছে বলে বেশ কয়েকটি সংবাদ সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষত জাপান গার্ডেন সিটির কুরবানীর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর আইনী নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানগণের একটি দ্বীনি উৎসব এবং পশু কুরবানী একটি দ্বীনি ইবাদাত। পবিত্র ঈদুল আজহায় সাধ্যমতো পশু কুরবানী করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের একটি ওয়াজিব (বাধ্যতামূলক) আমল। ‘জাপান গার্ডেন সিটি মালিক ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতি”-সহ দেশের সকল হাউজিং সোসাইটি, ফ্ল্যাট মালিক সমিতি বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের অধীনে নিবন্ধিত সোসাইটি। নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী এই ধরনের সমিতি অবশ্যই বাংলাদেশে প্রচলিত আইন মেনে চলতে বাধ্য। কোনো হাউজিং সোসাইটি বা ফ্ল্যাট মালিক সমিতি যদি অনিবন্ধিতও হয়, সেক্ষেত্রেও তারা বাংলাদেশে প্রচলিত আইন মেনে চলতে বাধ্য।
নোটিশ আরও বলা হয়, তথাকথিত করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাথে পশু কুরবানী করা কিংবা কুরবানীর পশুর কোনো সম্পর্ক নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কিংবা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন আসন্ন ঈদুল আজহায় পশু কুরবানী করা কিংবা হাউজিং কমপ্লেক্সে পশু প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এমন অবস্থায় “জাপান গার্ডেন সিটি মালিক ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতি”-র কার্যনির্বাহী কমিটি কিংবা একই ধরনের অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি বা ফ্ল্যাট মালিক সমিতির কোনো আইনগত এখতিয়ারই নেই যে, তারা এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে কুরবানীর পশু প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে।

নোটিশে বলা হয়, সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, সুতরাং দ্বীন ইসলামী আক্বীদাসমূহ রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ দ্বীন পালনের অধিকার রয়েছে। সুতরাং পবিত্র ঈদুল আজহায় পশু কুরবানী করা বাংলাদেশের প্রত্যেক মুসলমানগণের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ “জাপান গার্ডেন সিটি মালিক ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতি”-র কার্যনির্বাহী কমিটি কিংবা একই ধরনের অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি বা ফ্ল্যাট মালিক সমিতিগুলো ওই সকল হাউজিং কমপ্লেক্সে বসবাসরত মুসলিমদেরকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটিতে সংঘটিত এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করা এবং মুসলিমদের সুষ্ঠুভাবে পশু কুরবানীর ব্যবস্থা করা আপনার এখতিয়ার ও দায়িত্ব বটে।

সুতরাং কুরবানীর পশু প্রবেশে বাধা দেয়ার সিদ্ধান্ত পবিত্র দ্বীনি অধিকারে হস্তক্ষেপ এবং দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত, যা বাংলাদেশ দ-বিধি, ১৮৬০-এর ২৯৫(ক) ধারা মোতাবেক একটি ফৌজদারী অপরাধ। কুরবানীর পশু প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে একই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ঢাকার অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি, ফ্ল্যাট মালিক সমিতিও একই দায় বহন করে।

উক্ত নোটিশের মাধ্যমে জাপান গার্ডেন সিটিসহ ঢাকার সকল হাউজিং কমপ্লেক্সে পবিত্র কুরবানীর পশু প্রবেশের ব্যবস্থাসহ পশু কুরবানীর সকল ধরনের ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, নোটিশটি জাপান গার্ডেন সিটির বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি শেখ ওমর শরীফের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে।