ডাবের পানি কেন খাবেন? জেনে নিন স্বাস্থ্য উপকারিতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক: ডাবের পানির উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ প্রচুর। ডাবের পানির পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় এর চাহিদা অনেক বেশি। ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস সহ বিভিন্ন ভিটামিন প্রর্যাপ্ত রয়েছে। ডাবের ভেতরের স্বচ্ছপানি খুবই সুস্বাদু। এটি গরমে দিন পান করলে শরীরের সকল ক্লান্তি দূর হয়।ডাবের পানির পুষ্টি উপাদান বেশি থাকায় এটি রোগীদের খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। আমাদের দেশে প্রায় সকল স্থানে ডাব পাওয়া যায়। তবে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের কাছে ডাব খাওয়ার প্রবনতা অনেক বেশি।

ডাবের পানিতে বিদ্যমান উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানিতে
পানির অংশ ৯৫ গ্রাম
মোট খনিজ পদার্থ ০.৩ গ্রাম
আমিষ ২.৩ গ্রাম
শর্করা ২.৪ গ্রাম
চর্বি ০.১ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ০.০১ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি ০.১১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২, ০.০২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও
খাদ্যশক্তি ২৩ কিলোক্যালরি ।

ডাবের পানির উপকারিতা

  • ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম,খনিজ লবণ,ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতি উচ্চমাত্রায়। এসব খনিজ লবণ আমাদের দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। দাঁত ও মাড়িকে করে মজবুত। আর অনেকের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে। মাড়ি কালচে লাল হয়ে যায়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেবে খনিজ লবণ।
  • আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব হলে এবং নান ধরনের অসুখ-বিসুখ হলে ডাক্তার ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দেন৷ এর কারণ ডায়রিয়া বা কলেরা রোগীদের ঘনঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হয়।এবং দেহে প্রচুর পানি ও খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা যায়৷ এই ঘাটতি পূরনের জন্য ডাবের পানি অনেকাংশেই কাজ করে। 
  • আমাদের শরীরে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। নিয়াসিন রাইবোফ্লবিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি। আর প্রতিদিন এই পানি পান করলে শরীরের ভেতরের শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা কোনওভাবেই ক্ষতি করার সুযোগ পায় না।
  •  গ্রীষ্মকালীন গরমে ছোট-বড় সবারই দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ত্বকে ফুটে ওঠে লালচে কালো ভাব। এই পানি দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে রাখে ঠাণ্ডা।
  • তারুণ্য ধরে রাখতে এর অবদান অনেক। ডাবের পানি যেকোনো কোমল পানীয় থেকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ।
  • এটি সৌন্দর্যচর্চার প্রাকৃতিক মাধ্যম ও চর্বিবিহীন পানীয়।
  • ডাবের পানি মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকারী।
  • ডাবের পানিতে বিদ্যমান অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
  • যাদের মুখে জলবসন্তের দাগসহ বিভিন্ন ছোটছোট দাগ রয়েছে,তাদের জন্য সকালবেলা ডাবের পানি দিলে দাগ মুছে যায় এবং মুখের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা বাড়ে৷ গ্লুকোজ স্যালাইন হিসেবেও ডাবের পানি ব্যবহৃত হয়।
  • ডাবের পানিতে আছে সাইটোকিনিস নামে নামে একটি অ্যান্টি-এজিং উপাদান, যা শরীরের উপর বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

সতর্কতা
ঠান্ডা লাগা রোগীদের ডাবের পানি পান করলে ঠান্ডা বৃদ্ধি পেতে পারে। কিডনীর রোগীদের জন্য ডাবের পানির অপকারিতা রয়েছে।
ডাব নিয়মিত খেলে কিডনি রোগ হয় না কিন্তু কিডনি রোগ হলে ডাবের পানি পান করা সম্পূর্ণ নিষেধ৷ তার কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হয় না৷ ফলে ডাবের পানির পটাশিয়াম ও দেহের পটাশিয়াম একত্রে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোই অকার্যকর করে দিতে পারে৷ এই অবস্থায় রোগীর মুত্যু হতে পারে৷ তাই যাদের দেহে প্রচুর পটাশিয়াম আছে এবং বের হয় না তাদের ডাবের পানি পান করা ঠিক না ৷ এক্ষেত্রে ডাবের পানি রোগীকে পান করানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ৷ যে সব লোক ওজন কমাতে চান তাদের ডাবের পানি বেশি না খাওয়াই ভাল। কারণ, ডাবের পানি শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়ায়।অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পানীয় বা ফলের রসের তুলনায় ডাবের পানিতে চিনির পরিমান কম থাকে। তবুও ডাবের পানি খেলে নিমেষে বেড়ে যায় ক্যালরি।