জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে লিগ্যাল নোটিশ

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  “মেয়েদের সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার একটি কারণ হলো বাল্যবিবাহ” -এমন বিরূপ ও ইসলামবিরোধী মন্তব্যের কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বিশ্ববার্তা২৪’-এর সম্পাদক মুহম্মদ আরিফুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট শেখ ওমর শরীফ আজ বুধবার রেজিস্টার্ড ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি প্রেরণ করেন।

গত ৫ জুলাই ২০২০ তারিখে দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘জঙ্গিবাদের ঝুঁকিতে নারীরা” শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে অধ্যাপক শাহাব এনাম খান মন্তব্য করেছিলেন, মেয়েদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার একটি কারণ হলো বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহের পর কোনো পরিবারে জঙ্গিবাদের চর্চা হলে মেয়েটিও আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে না।”

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রচলিত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭-এর ১৯ ধারার বিধান অনুযায়ী অভিভাবকের সম্মতি ও আদালতের অনুমতিক্রমে ২১ বছরের কম বয়সী পুরুষ ও ১৮ বছরের কম বয়সী নারীরা বৈধভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। এছাড়া মুসলিম পারসোনাল ল (শারীয়াত) এপ্লিকেশন অ্যাক্ট, ১৯৩৭-এর অধীনেও অনূন্য ১৫ বছর বয়সী পুরুষ ও নারী স্বাধীন সম্মতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। অর্থাৎ তথাকথিত বাল্যবিবাহ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে একটি স্বীকৃত ও আইনসম্মত বিয়ে। পবিত্র ইসলামী শরীয়াতেও এই ধরনের বিয়ে সম্পূর্ণ বৈধ। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি উম্মল মুমিনীন হযরত সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনাকে দুনিয়াবি ৬ বছর বয়সে আক্বদ করেছিলেন এবং দুনিয়াবী ৯ বছর বয়সে নিজ হুজরা শরীফে গ্রহণ করেছিলেন।

নোটিশে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং এর সাথে বহু আন্তর্জাতিক ও জাতীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ফ্যাক্টর জড়িত। পশ্চিমা দেশগুলোতেও নারীরা সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ছে এবং সেটার হার বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশেও নারীরা মাদক, যৌতুকসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত রয়েছে। কিন্তু তথাকথিত বাল্যবিবাহকে এই ধরনের অপরাধের কারণ হিসেবে দেখানোর মতো কোনো তথ্য-উপাত্ত বা গবেষণা কোথাও নেই। অথচ নোটিশগ্রহীতা অধ্যাপক শাহাব এনাম খান সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে সন্ত্রাসবাদের মতো একটি জঘন্য অপরাধের সাথে বাল্যবিবাহকে সম্পৃক্ত করেছেন।

নোটিশদাতা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের আইনে ও পবিত্র ইসলামী শরীয়াতে বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ বৈধ এবং এই সামাজিক প্রথার সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক নেই, তাই নোটিশগ্রহীতা অধ্যাপক শাহাব এনাম খানের মন্তব্যে নোটিশদাতার দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত লেগেছেÍযা বাংলাদেশ দ-বিধির ২৯৫(ক) ধারা অনুযায়ী একটি অপরাধ।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, এই নোটিশ পাওয়ার ৭ কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশদাতাকে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় নোটিশদাতা আইনের আশ্রয় গ্রহণ করবেন।