চালের দাম বাড়ায় আমরা খুশি -কৃষিমন্ত্রী

চালের দাম বাড়ায় আমরা খুশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। গত ৮ মাস যাবত চাচ্ছি চালের দাম বাড়ুক। সরকার চালের এ মূল্যবৃদ্ধিতে খুশি বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘কৃষি তত্ত্ব সমিতি’র ১৮তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের চালের উৎপাদন বেড়েছে। আমরা চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চালের দাম বাড়াতে আমরা খুশি। গত ৮ মাস যাবত চাচ্ছি চালের দাম বাড়ুক। চালের দাম না বাড়লে চাষিরা উৎপাদন খরচ কীভাবে তুলবে? আমাদের ট্রাক যায় প্রতিদিন। ১ ছটাক চাল বিক্রি করতে পারে না। ৩০ টাকা কেজির চাল কেউ নেয় না। ডিলারদের চাপ দেওয়া হচ্ছে মোটা চাল তোলার জন্য, কিন্তু তারা তুলছে না। মোটা চাল খারাপ কিছু না। মোটা চাল খাবে না কেন মানুষ! মোটা চালের দাম একটি টাকাও বাড়েনি। তারপরও মিডিয়া বলছে চালের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, গত ৮ মাস মিডিয়ায় লেখালেখি হচ্ছে কৃষকরা চালের দাম পাচ্ছে না। পাইকাররা চালের দাম নিয়ে যাচ্ছে। সরকার কিছু করছে না। সুশীল সমাজ প্রচ-ভাবে আমাদের সমালোচনা করে আসছিল। নানাভাবে বলেছি, আমরা চেষ্টা করছি কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেয়ার। কিন্তু পারছি না। চাষিরা চাষাবাদ করে, কঠোর পরিশ্রম করে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তারা কাজ করে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে তারা কাজ করে। রক্ত পানি করে সোনালী ফসল ফলায় তারা। আর সেই কৃষক ধানের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। এজন্য আমরা চিন্তিত ছিলাম। নানারকম কর্ম-পদক্ষেপ নিয়েছি। পলিসি লেভেলে এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৮ মাস ধরে মিডিয়া আমাদের সমালোচনা করেছে। কয়েকদিন আগে চালের দাম ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। সংবাদপত্রে বেশকিছু নিউজ হয়েছে সরকারকে বিব্রত করে। সে প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল পেঁয়াজের মতো দাম বাড়ছে চালের।

আমদানি নির্ভর ফসলের উৎপাদন বাড়াতে হবে:

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আমদানি নির্ভর ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, কৃষিবিদদের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং আমাদের মেহনতি কৃষক ভাইদের জন্য, সর্বোপরী প্রধানমন্ত্রীর কৃষির প্রতি দরদের ফলে এসব সম্ভব হয়েছে। নগরায়ণ, শিল্পায়নের ফলে বছরে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে,তাই আমাদের অল্প জমিতে অধিক ফসল ফলাতে হবে এবং মাটির স্বাস্থ্যের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

ড. রাজ্জাক বলেন, আমাদের কৃষিতে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে ,বিশেষ করে কৃষি শ্রমিকের হ্রাস, জমির উর্বরতা এবং পানি প্রাপ্যতা হ্রাস পাচ্ছে। এর পরেও আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষির এই উৎপাদনশীলতাকে টেকসই করতে হলে কৃষির প্রক্রিয়াজাত, বাণিজ্যিকীকরণ ও রপ্তানিতে যেতে হবে। আমাদের সুন্দর ভবিষৎ নির্ভর করে কৃষির ওপর। শুধু ধানের ওপর নির্ভর করলে হবে না এর পাশাপাশি লাভজনক ফসল আবাদ করতে হবে।’

দেশে তৈল বীজ ও ডালের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামীতে ভুট্টার উৎপাদন ৬০ থেকে ৭০ লাখ মেট্রিক টন করতে হবে। কারণ ভুট্টা হতে তেল উৎপাদন করা যায়। তিনি বলেন কৃষির বৈচিত্রায়ন ও নিরাপদ পুষ্টিকর খাদ্যের প্রতিও অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।