গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শনিবার

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শনিবার। দুপুর একটার দিকে জেলা শহরের ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রাজবাড়ি মাঠে বিশাল আকৃতির নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। সম্মেলন উদ্বোধক হিসেবে থাকছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি। সম্মেলনে প্রধান বক্তা থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মণি এমপির উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অন্যান্য নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সম্মেলনে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন এ আলোচনা এখন দলীয় নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে।

রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গাজীপুর মহানগরের সম্মেলনকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। সম্মেলন সফল সার্থক ও বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হয়েছে প্রস্তুতিমূলক সভা-সমাবেশ। এসব সভা-সমাবেশে প্রতি দিনই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পোস্টার-ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড সম্মেলনস্থল ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দলের কর্মী-সমর্থকরা তাদের পছন্দের পদ প্রার্থীদের পক্ষে সমর্থন চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতার অভিমত, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনি যাকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য মনে করেন, তাকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত বা মনোনীত করবেন।

সভাপতি পদে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্লাহ খান ও সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলিমউদ্দিন বুদ্দিনের নামই বেশী শোনা যাচ্ছে। সভাপতি পদে প্রার্থী কম থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া অনেক নেতা। তাদের শুভেচ্ছা বিলবোর্ড, পোস্টার-ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রধান সড়ক, অলিগলি এবং সম্মেলনস্থল শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠ।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সম্পাদক পদে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতির নাম। তিনি গাজীপুরের জনপ্রিয় সাবেক সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টারের ছোট ভাই ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির চাচা। এ ছাড়া এ পদে প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন সরকার রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান, সদস্য অ্যাডভোকেট মো: আব্দুল হাদী শামীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মো: কামরুল আহসান সরকার রাসেল, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো: আব্দুল হালিম সরকারের নামই বেশি শোনা যাচ্ছে।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি জানান, গাজীপুর মহানগরের নেতৃত্বে কারা আসবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। দেশের সচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন ও বড় দল হিসেবে অনেক প্রার্থী থাকাটাই স্বাভাবিক। সৎ, ত্যাগী ও জনপ্রিয়রাই শীর্ষ পদে আসবেন এমনটাই ধারণা করেন তিনি।

২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন সৃষ্টি হলেও মহানগরীর মর্যাদা পায় ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটারের এই মহানগরীর। বর্তমানে ৮টি মেট্রোপলিটান থানা এলাকা নিয়ে এই মহানগীরর রাজনৈতিক দলগুলির কর্মকান্ড শরু হয় বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের আওয়ামী লীগের ২০১৫ সালের গঠিত কমিটির কর্মকান্ডের মাধ্যমে। ৭ বছর আগে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম কমিটির সভাপতি হিসেবে এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং ২১ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়।