গাজীপুরে মরুভূমির খেজুর চাষ

গাজীপুরে মরুভূমির খেজুর চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী আলীমপাড়া গ্রামে নিজ জমিতে ‘সৌদি ডেট পাম ট্রিস ইন বাংলাদেশ’ নামে ব্যক্তি উদ্যোগে খেজুরের আবাদ করছেন। মরুভূমির ফল খেজুর চাষ করে এখন রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন নজরুল ইসলাম বাদল। খেজুর চাষের পাশাপাশি খেজুর চারার নার্সারিও গড়ে তুলেছেন ওই চাষি। খেজুর আবাদের সফলতায় দেশের বিভিন্ন জেলার আগ্রহী চাষিরাও তার কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে খেজুর চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন।

প্রথমে ৭০ শতক জমিতে সৌদি আরবের খেজুরের জাত নিয়ে বাগান শুরু করেন। ২০১৭ সালে প্রথম তার বাগানে ফলন আসতে শুরু করে। পাশপাশি নার্সারিও গড়ে তোলেন। সেই বছরই বাগান থেকে উৎপাদিত চারা ৬২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।এরপর তার শুধুই সামনে এগিয়ে চলা। বর্তমানে তার বাগানে ১৬ প্রজাতির খেজুর গাছ রয়েছে।

চাষি নজরুল ইসলাম বাদল জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন জাতের ১১টি গাছ রোপণ করেছিলেন বছর তিনেক আগে। এ বছর ওই গাছগুলোতে খেজুরের বাম্পার ফলন এসেছে। যার এক একটি খেজুরের বাঁধার ওজন প্রায় ২৫ কেজি। তার এ সফলতা যারপরনাই খেজুর চাষে আগ্রহীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নতুনভাবে খেজুর চাষে আগ্রহীদের মধ্যে তার এ সফলতা প্রেরণা জুগিয়েছে। বর্তমানে তিনি ৩০ হাজার চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেজুরের নার্সারি গড়ে তোলেছেন। যেভাবে ফলন হচ্ছে তা ঠিক থাকলে অচিরেই তিনি দেশের বাইরেও খেজুর রপ্তানি করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।

চাষি নজরুল ইসলাম বাদল বলেন, তার ধারাবাহিক সাফল্য দেখে স্থানীয় বেকার যুবকদের অনেকেই খেজুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাদের মধ্যে পিরুজালী গ্রামের মঞ্জুরুল হক মঞ্জু জানান, তিনি ১০টি খেজুরের চারা সংগ্রহ করে আবাদ করেছেন। এ বছর তারও ফলন হয়েছে আশাতীত। অপর চাষি পিরুজালী মাস্টারপাড়া এলাকার শামীম জানান, তিনিও নজরুল ইসলাম বাদলের কাছ থেকে চারা নিয়ে খেজুর বাগান করেছেন। তিনি সৌদি খেজুরের জাত সংগ্রহ করে বাগান করেন। সৌদি খেজুরের জাত হলেও এদেশে উৎপাদিত খেজুরের স্বাদ, গন্ধ, বৈশিষ্ট্য সবই সৌদি আরবের খেজুরের জাতের মতো।

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম জানান, বাংলাদেশে সৌদি আরবের খেজুর চাষ একটি সম্ভাবনা। এর জন্য কৃষি পর্যায়ে গবেষণা প্রয়োজন। এতে খেজুর চাষের প্রক্রিয়ার আরও সহজতর দিক আবিষ্কার হবে। হর্টিকালচার সেন্টারকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। কৃষক পর্যায়ে খেজুর চাষের বার্তা পৌঁছে দিলে এটি পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়বে। লাভজনক এ চাষে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠবে।