গরমে খান তরমুজের জুস

তরমুজের নানা গুণ। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামছুন্নাহার নাহিদের তথ্য অনুযায়ী, ‘প্রতিদিন দুই কাপের মতো তরমুজ খেলে শরীরে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সির চাহিদা মেটে। এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরে ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সবুজ খোসাসহ তরমুজ ক্যানসার রোগীদের জন্য খুবই আদর্শ। এ ছাড়া অ্যাজমা, ডায়াবেটিসের মতো রোগ এবং ব্যথা উপশমে তরমুজ ভারি উপকারী।’

তরমুজের জুস যেভাবে বানাবেন
উপকরণ: মাঝারি আকারের তরমুজ ১টি, পুদিনাপাতা ১৬টি, লবণ ১ চা-চামচ, ভাজা জিরার গুঁড়া ২ চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ ও চিনি স্বাদমতো।
প্রণালি: তরমুজ টুকরো (কিউব) করে কেটে বিচি ছাড়িয়ে নিন। পুদিনাপাতা আলাদা করে ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার সব উপকরণ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তারের চালনি বা স্ট্রেইনার দিয়ে ছেঁকে বরফকুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

উপকার:

১. গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তরমুজের শতকরা ৯২ ভাগই পানি। তাই তরমুজ খেলে সহজেই পানির তৃষ্ণা মেটে।
২. তরমুজের থাকা বিশেষ কয়েক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড ক্রমাগত নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে রক্তের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালি বজায় রাখে।
৩. এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। এতে বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণও অনেক। বিটা ক্যারোটিন চোখ ভালো রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
৪. তরমুজের জুস খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকে। কারণ, ভিটামিন এ ত্বককে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে ত্বকের সুরক্ষা দেয়।
৫. তরমুজের ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ শরীরে এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে এবং এই গরমেও শরীরকে চাঙা রেখে, শরীরকে কর্মক্ষম রাখে।
৬. তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। যখন গরমে ঘেমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়, তখন এটি খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়।
৭. তরমুজে আছে পটাশিয়াম, যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমায়।
৮. তরমুজে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া নিয়মিত তরমুজ খেলে প্রোস্টেট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার ও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
৯. তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে। আর তাই তরমুজ খেলে পেট ভরে যায় সহজে কিন্তু সেই অনুযায়ী তেমন কোনো ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করে না। যত ইচ্ছা তরমুজ খেলেও তাই ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও থাকে না।
১০. অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

সাবধানতা: তরমুজ হজম হয় ধীরে। যাঁদের তরমুজ সহ্য হয় না, তাদের পেট খারাপ হতে পারে। তাই রাতের বেলা তরমুজ না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।