কেবল প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন তাই হবে: রিজভী

নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা চাইবেন, কেবল তাই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘বাকশাল গঠন করার পর ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব বিনাভোটে জেলা গভর্নর বানিয়েছিলেন। আর আজ তার যোগ্যকন্যা জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩টি আগের রাতে সিল মেরে নির্ধারণ করেছেন। এবারে গভর্নরের মতো বিনাভোটে জেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হতে নৌকা প্রতীক লাগে, জনগণের ভোট লাগে না। অলিখিত বাকশাল তো এখনো চলছে। সেইসাথে আছে বাকশালের রক্ষী বাহিনীও। দেশে এখন শুধুমাত্র একদল নয়, এক ব্যক্তির বেপরোয়া শাসন চলছে। কেবল প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন তাই হবে। ’

নব্য বাকশালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এক আলোচনা সভায় বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত বাকশাল কার্যকর থাকলে নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতো না, প্রশ্ন উঠতো না। বাকশাল ছিল সর্বোত্তম পন্থা।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এতদিন পর খোলস ছেড়ে আসল রূপে বেরিয়ে এসেছেন। গণতন্ত্র-গণতন্ত্র বলে কথার কুহেলিকা ভেদ করে প্রধানমন্ত্রীর গণবিরোধী নাৎসীবাদের মূল চেহারাটা জনগণের নিকট উন্মোচিত হলো। অনেকদিন পর প্রধানমন্ত্রীর আসল রাজনৈতিক বিশ্বাসটি প্রকাশিত হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে শেখ হাসিনা পিতার প্রদর্শিত দর্শণে বিশ্বাসী বলেই একতরফা, মিডনাইট নির্বাচন এবং বিরোধী দল ও ভিন্নমতবিহীন। য়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে সব দল, বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্র, ট্রেড ইউনিয়ন ও পেজনগণের পক্ষ থেকে আমার প্রশ্ন, তাহলে কি তিনি তার পিতার মতো জাতীয় সংসদে দাঁড়িশাজীবী সংগঠন নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছেন? তার কথায় প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক বাকশাল পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বিনা ভোটে বিনা প্রতিদ্বিন্দ্বতায় আজীবন ক্ষমতায় থাকার খোয়াব দেখছেন শেখ হাসিনা। ’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মিডনাইট ভোট ডাকাতির পর গোটা দেশের ভোট বঞ্চিত মানুষ এমনভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে আছে যে, গণবিস্ফোরণ শুরু হলে গণভবনের ইট পাথরও থাকবে না। জনগণ কতটা ঘৃণা করছে এই সরকারকে তার সামান্য প্রমাণ হচ্ছে, উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে না এসে তীব্র নীরব প্রতিবাদ করছে। ভোটকেন্দ্রে এখন কুকুর-বিড়াল আর পুলিশ ছাড়া কেউ আসছে না। মাংস-খিচুড়ি খাইয়েও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারছে না ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। তাই বলছি, চোখ কান খোলা রেখে জনগণের দিকে তাকিয়ে দেখুন তারা কি চাচ্ছে। তাদের ফুসেঁ ওঠার সময় এসেছে। ‘

প্রধানমন্ত্রীকে চরম প্রতিহিংসার বাসনা চরিতার্থ করতে পেয়ে বসেছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘তিনি পরিত্যক্ত অন্ধকার স্যাঁতসেতে কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়ার ছটফটানি দেখে আনন্দ উপভোগ করছেন। আজ দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, তিনি জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চান না। ’

এ সময় অসুস্থ খালেদা জিয়াকে প্রহসনমূলক বিচারের জন্য কারাগারে স্থাপিত মিডনাইট ইলেকশনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যাঙ্গারু আদালতে টেনে-হিঁচড়ে প্রায় প্রতিদিনই হাজির করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

ধৈর্যের একটা সীমা আছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টা বন্ধ করে আজই তার পছন্দমতো বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করুন। তাকে মুক্তি দিন। জনগণের ধৈর্য ও সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। সরকার যেন নিজেদেরকে অশুভ পরিণতির দিকে ঠেলে না দেয়। ’