কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করা খাছ সুন্নত

মুহম্মদ গাজী ইবনে ইসহাক: আখেরি নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ হাতে কুরবানী করেছেন। এজন্য কুরবানীর পশু নিজ হাতে জবাই করাই খাছ সুন্নত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت انس بن مالك رضى الله عنه قال : ضحى رسول الله صلى الله عليه وسلم بكيشين املحين اقرنين ذبحهما بيده سمى وكبر قال ربيته واضعا قدمه على صفاحهما ويقول بسم الله والله اكبر .
অর্থ:- “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক ঈদে ধুসর রংয়ের শিংদার হৃষ্টপুষ্ট দু’টি দুম্বা কুরবানী মুবারক করলেন। তিনি উনাদেরকে নিজ হাত মুবারকে যবেহ করলেন এবং (যবেহ করার সময়) বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর বললেন।

হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি উনাকে (যবেহ করার সময়) পশুর পাঁজরের উপর উনার ক্বদম মুবারক রাখতে এবং বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর বলতে শুনেছি।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ বাবু ফিল উদ্বইয়্যিাহ)

উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, পবিত্র কুরবানী উনার পশু নিজ হাতে ছুরি দ্বারা যবেহ করা খাছ সুন্নত মুবারক। মেশিনে যবেহ করা নাজায়িয অর্থাৎ যবেহ ও কুরবানী উভয়টাই বাতিল হওয়ার কারণ।

কুরবানীর ৩দিন হাঁস, মুরগি, কবুতর ইত্যাদি যবেহ করা জায়িয নেই:

মুসলমানদের আইয়ামে নহর বা পবিত্র কুরবানী উনার দিনসমূহে যারা মজুসি বা অগ্নিউপাসক তারা তাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ্ করে থাকে। এখন যদি কোন মুসলমান তাদের সাথে মুশাবাহ্ বা সাদৃশ্য রেখে পবিত্র কুরবানী উনার দিন হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ্ করে, তাহলে সেটা কুফরী হবে। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে ব্যক্তি তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মিশকাত শরীফ)

আর যদি কোনো মুসলমান সাধারণভাবে উক্ত সময়ে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ্ করে, তাহলে সেটা মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে, যেহেতু এটাও মুশাবাহ্ হয়ে যায়।

আর যদি কোন মুসলমান খুব জরুরতে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ্ করে, তাহলে সেটাও মাকরূহ্ তান্যিহী হবে।
অতএব, যাদের উপর পবিত্র কুরবানী ওয়াজিব অথবা ওয়াজিব নয় তারা যদি পবিত্র কুরবানীর দিন হাঁস, মুরগি ইত্যাদি খেতে চায়, তাহলে তারা যেন ছুব্হে ছাদিকের পূর্বেই সেটা যবেহ্ করে কেটে রান্না করে রেখে দেয় অথবা শুধু যবেহ্ করে কেটে রেখে দিবে পরে রান্না করলেও চলবে।