কুরবানির পশু হাটে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আইনি নোটিশ

কুরবানির পশু হাটে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আইনি নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল আযহায় কুরবানির পশুর হাট বসতে না দেয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মুহম্মদপুর তাজ জামে মসজিদের খতিব আবুল খায়ের মুহম্মদ আজিজুল্লাহ।

আবুল খায়ের মুহম্মদ আজিজুল্লাহর পক্ষ থেকে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবি শেখ ওমর শরীফ নোটিশটি পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, গত ১২ জুলাই ২০২০ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক সভায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে এ বছর রাজধানীতে কুরবানির কোনো পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে যা দেশের প্রায় সকল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত দেশের দ্বীনপ্রাণ মুসলমানদের দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।

নোটিশদাতা বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা ও পবিত্র কুরবানি মুসলমানগণের একটি দ্বীনি ইবাদত। পবিত্র ঈদুল আযহায় সাধ্যমতো পশু কুরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানগণের একটি ওয়াজিব আমল। কুরবানির পশুর হাট, পশু কেনা-বেচা, পশু কুরবানি ইত্যাদি কাজ সারতে সারা বছরে মাত্র ৩/৪ দিন সময় লাগে।

কুরবানির পশুর হাট প্রকৃতপক্ষে দেশবাসীর নাগালের মধ্যেই এ জন্য রাখা উচিত। কুরবানির পশু কেনাও মুসলমানগণের একটি নাগরিক অধিকার। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভায় পশু হাট না বসানোর সিদ্ধান্তে দেয়ায় তা বাংলাদেশের মুসলমানদের দ্বীনি কার্যক্রম পালনে বাধার সৃষ্টি করেছে। এই সিদ্ধান্ত তথাকথিত করোনাভাইরাসের অজুহাতে নেয়া হয়েছে যার সাথে পবিত্র কুরবানির কোনো সম্পর্কই নেই। এছাড়া, সরকার ইতোমধ্যে সারা দেশে সাধারণ ছুটির মাধ্যমে ঘোষিত কথিত লকডাউনও অনেকটাই তুলে নিয়েছে। অন্যদিকে, মানুষকে ঘরে আটকে রেখে লকডাউন করার পদ্ধতিরও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিক নেই।

নোটিশে আরো বলা হয়, সাংবিধানিকভাবে যেহেতু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন সম্মানিত ইসলাম সুতরাং ইসলামি আক্বীদাসমূহ রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের যে কোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে’।

সুষ্ঠুভাবে কুরবানির পশু কিনতে পারা ও পশু কুরবানি করতে পারা বাংলাদেশের প্রত্যেক মুসলিমের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ রাজধানীবাসীকে এই সাংবিধানিক অধিকার পালনে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। গরুর হাট বসতে না দেয়ার মাধ্যমে রাজধানীর লাখ লাখ মুসলমানগণের কুরবানির আয়োজন ও ব্যবস্থাপনাকে কঠিন ও প্রায় অসম্ভব করে তোলা হয়েছে যা নোটিশদাতার দ্বীনি অধিকারে হস্তক্ষেপ ও দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তাই এই নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে আসন্ন পবিত্র কুরবানিতে পশুর হাট বসতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যহার না করলে এবং পশুর হাট বসানোর ব্যবস্থা না করলে নোটিশদাতা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।